শিক্ষার্থীদের অনশনের ১৬ ঘণ্টা পার, ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের

কুবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীরা
কুবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রক্টরের পদত্যাগসহ পাচঁ দফা দাবিতে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন পাঁচ শিক্ষার্থী। অনশনের ১৬ ঘণ্টা পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। তবে রাত সোয়া ১২টায় অনশনরতদের দেখতে আসেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।  

এ সময় উপ-উপাচার্য বলেন, সবারই গণতান্ত্রিক অধিকার আছে প্রতিবাদ করার। যেকোনও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, যেকোন ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য বা আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষকদের যেমন অধিকার আছে তেমনি শিক্ষার্থীদেরও অধিকার আছে। তাদের প্রতিবাদ জানানোর যে ভাষা সেটা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বসবো। 

রোববার (১৯ মার্চ) বিকেলে শুরু হওয়া এ অনশন সোমবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলমান রয়েছে। তবে রাত পৌনে ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং অন্যান্য প্রশাসনিক ব্যাক্তিরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন করবেন তারা। 

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার, প্রক্টরের অপসারণ, বহিষ্কৃত দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ পাচঁ দফা দাবিতে এ আমরণ অনশনে বসেছেন তারা। 

টানা ১০দিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পর এবার আমরণে বসেছে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, একই হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সালমান চৌধুরী হৃদয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ইমতিয়াজ শাহরিয়া ও কাজল হোসাইন এবং কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান পলাশ।

অনশনরত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ শাহরিয়ার বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত এবং অছাত্রদের হামলার প্রশাসন কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন করে যাবো।

ঘটনার ১১ দিন পরও হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করায় এবার আমরণ অনশনে বসেন তারা। বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। 

এবিষয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। তাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য আহ্বায়ন জানিয়েছি। তবে তারা কোন সাড়া দেয়নি।

অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে প্রক্টরিয়াল টিম ছাড়াও উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, ডিন ও বিভাগের শিক্ষকরা এসে কথা বলেছেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় অনশনকারী শিক্ষার্থীদেরকে দেখতে এসে সান্ত্বনা দিয়ে যান কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান। তবে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর না দিয়েই স্থান ত্যাগ করেন তিনি।

অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মঈন। এসময় তিনি আন্দোলন তুলে নিতে অনুরোধ করলেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন। সাংবাদিকরা জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, আমি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চাই না।


সর্বশেষ সংবাদ