করোনাভাইরাস

সেবাখাতে বেকার ১১.২২ লাখ শ্রমিক, আয় কমেছে ১৭.৬ শতাংশের

গেল বছর করোনায় ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি এবং পরবর্তী সময়ে সেবাখাত ঘুরে দাঁড়াতে না পারায় এমন ক্ষতির মুখে পড়েছে
গেল বছর করোনায় ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি এবং পরবর্তী সময়ে সেবাখাত ঘুরে দাঁড়াতে না পারায় এমন ক্ষতির মুখে পড়েছে  © ফাইল ছবি

দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির অর্ধেকের বেশি অবদান রাখা সেবাখাতে গেল বছর বেকার হয়েছেন ১১.২২ লাখ শ্রমজীবী। এ খাতে নিয়োজিতদের আয় কমেছে ১৭.৬ শতাংশ এবং ২১.৬ শতাংশ কর্মঘন্টা হারিয়েছেন তারা। গেল বছর করোনায় ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি এবং পরবর্তী সময়ে সেবাখাত ঘুরে দাঁড়াতে না পারায় এমন ক্ষতির মুখে পড়েছে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংক কোয়ার্টার্লি (জানু-মার্চ) প্রতিবেদনে শ্রমবাজারে কোডিভ এর অভিঘাত নিয়ে এক পর্যালোচনায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যালোচনায় বলা হয়, গেল বছর কৃষি ও শিল্পখাতের ক্ষতি সেবাখাতের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে কম। কৃষিখাতে ৭.৮১ লাখ বেকার হলেও, এ খাতে নিয়োজিতদের আয় কমেনি- বরং ১.২ শতাংশ বেড়েছে। তবে কর্মঘন্টা হ্রাস পেয়েছে ৩.৮ শতাংশ। শিল্পখাতে বেকারের সংখ্যা ৬.৯৫ লাখ, আর এ খাতের শ্রমিকদের আয় কমেছে ৭.১ শতাংশ।

এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, সেবাখাতে কাজ হারিয়ে অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামে গিয়েছেন। তাদের অনেকে আবার কৃষিতে যুক্ত হয়েছেন। তবে তাদের আয় সেবাখাতে কাজ করার সময় যা ছিল সেই পর্যায়ে যায়নি।

তিনি বলেন, সেবাখাতের বড় উপখাত হলো পরিবহন, পর্যটন, হোটেল, মোটেল, রেস্তোরা, আবসান ও নির্মাণ ইত্যাদি। কোভিডের কারণে যে লকডাউন দেয়া হয়েছিল, তাতে এসব খাত সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিবহন ও পর্যটন এখনো ক্ষতির মধ্যেই আছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই সেবাখাতে কোভিডের প্রভাব বেশি পড়েছে, যার ফলে বেকারের সংখ্যা এবং আয় হ্রাস পাওয়ার পরিমাণও বেশি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া নানা ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজ অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী শ্রম বাজার ধরে রাখাসহ সকল খাতে সুষমভাবে পুনরুদ্ধার নিশ্চিতে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের প্রভাব নিরূপণে আরও বিস্তৃত গবেষণা দরকার।

মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোভিড মোকাবিলায় সরকারকে দ্রুত টিকাকরণ কার্যক্রম শেষ করতে হবে। বর্তমানে যে কঠোর লকডাউন চলছে এটা ভালো উদ্যোগ। তবে খেয়াল রাখতে হবে, খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিকে সামাল দিয়েই সরকারকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাস করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ