ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে বাজেট পরবর্তী আলোচনা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ জুন ২০২২, ০১:৫২ PM , আপডেট: ১২ জুন ২০২২, ০২:১২ PM
‘পোস্ট বাজেট ডায়ালগ ফিসকাল ইয়ার ২০২২-২৩’ শীর্ষক বাজেট পরবর্তী এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস ফোরাম। এবারের বাজেটকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রণীত বাজেট হিসেবে উল্লেখ করেন সভার আলোচকরা ।
রোববার (১২ জুন) অনুষ্ঠিত এ সভায় আলোচক হিসেবে অংশ নেন ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের প্রফেসর ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এবং আইপিডিসি ফিনান্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও মোমিনুল ইসলাম।
প্রফেসর ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, 'বাজেটে যেসব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলো গ্রহণযোগ্য বলে আমি মনে করি। কিন্তু বাস্তবায়ন নিয়ে সমস্যা রয়েছে। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে আশঙ্কা করা হচ্ছে সাড়ে সাত শতাংশ, এটা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা বস্তুনিষ্ঠ না।'
আরও পড়ুন: ১৫ জুন থেকে তিন সপ্তাহ কোচিং সেন্টার বন্ধ।
বাজেট ঘাটতি নিয়ে এই মির্জ্জা আজিজুল বলেন, ‘এবার বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, এটা গ্রহণযোগ্য। বর্তমান প্রেক্ষিতে বাজেট ঘাটতি ৬ শতাংশ ধরলেও আমার তাতে আপত্তি থাকতো না।’
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিভিন্ন কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানিসহ পণ্য সাপ্লাই চেইন ব্যাহত হয়েছে। সে কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। বেড়েছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যাও। তাই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ব্যয় বাড়ানো দরকার। প্রকৃত দারিদ্ররাই যাতে এর সুফল ভোগ করতে পারেন, এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাও নিশ্চিত করতে হবে।’
বাংলাদেশে আয় বৈষম্য ও আঞ্চলিক বৈষম্য বেড়েছে জানিয়ে মির্জা আজিজ বলেন, ‘রংপুর ও বরিশাল অঞ্চলের ৪০ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে এবং চট্টগ্রামে এটা অনেক কম। আঞ্চলিক বৈষম্য না কমাতে পারলে জাতিসংঘের এসডিজি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।’
সভায় সিইও মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সাত শতাংশ কর দিয়ে পাচার করা টাকা বৈধ করার সুযোগ দিলেও খুব একটা অর্থ দেশে আসার সম্ভাবনা কম। প্রায় ১৭টি দেশ সাম্প্রতিক সময়ে একই চেষ্টা করেছে। কোনো দেশই খুব ভালোভাবে সফল হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে টিউশন ফির ক্ষেত্রে ভ্যাট দিতে হবে। এখন এগুলোকে ইনকাম ট্যাক্সের আওতায় আনা হচ্ছে। এটা চিন্তার একটা বিষয়। এর ফলে ভবিষ্যতে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পুরোপুরি মুনাফা নির্ভর হয়ে যেতে পারে।’ নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপও করেন তিনি।
আলোচনা সভা শেষে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিদের করা বাজেট বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদরা। এ সময় ল্যাপটপ ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর ট্যাক্স প্রত্যাহারে বিষয়ে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান ডিপার্টমেন্ট অব ম্যাথমেটিকস অ্যান্ড ন্যাচারাল সায়েন্সের চেয়ারপারসন এএফএম ইউসুফ হায়দার।