স্থায়ী ক্যাম্পাস ও সনদের বিষয়ে আর ছাড় নয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে

ইউজিসি
ইউজিসি  © লোগো

সরকার থেকে অনুমোদন পাওয়ার ১২ বছরের মধ্যেই সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার নিয়ম রয়েছে। শুধু তাই নয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুযায়ী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে স্থায়ী সনদের জন্য আবেদন করারও নিয়ম রয়েছে।

তবে সরকারের এই আইন মানছে না অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। আইন না মানা এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে এবার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

ইউজিসির তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০৮টি। এর মধ্যে ৯৯টি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ১৯৯২ সালে প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হওয়ার পর যেসব বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি অনুমোদন পেয়েছিল, এখন পর্যন্ত তাদের অনেকেই স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাননি।

আরও পড়ুন: স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি ২৭ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

এরপর ২০১০ সালে ওই আইনের প্রথম সংশোধনীতে বেশ কিছু বাধ্যবাধকতা আরোপ করায় এখন পর্যন্ত মাত্র ৩১ বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আর স্থায়ী সনদ নিয়েছে মাত্র ৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে শর্তসাপেক্ষে স্থায়ী সনদ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, এখনও ১৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভাড়া বাড়িতে এবং অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই পরিস্থিতিতে স্থায়ী ক্যাম্পাসে ‘যাওয়া না যাওয়া’ সব ধরনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে ইউজিসি। শিগগির এ ব্যাপারে পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ইউজিসির সতর্কতা

ইউজিসির তথ্যমতে, আইন অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণ (ঢাকা মহানগরে অনুমোদন প্রাপ্তরা এক একর, ঢাকার বাইরে তিন একর) জমিতে এবং নির্ধারিত সময় ১২ বছরের মধ্যে (প্রথম অনুমোদন পাওয়ার পর ৫ বছর এবং অতিরিক্ত আরও ৭ বছর মিলিয়ে মোট ১২ বছর) একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি। 

নিজস্ব ও স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী সনদের জন্য আবেদন করার আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এজন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ইউজিসির কাছে আবেদন করতে হয়। স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকারী ৩১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী সনদের জন্য আবেদন করেনি। এর মধ্যে ১৮টি ২০১০ সালের আগে অনুমোদনপ্রাপ্ত, ৮টি অনুমোদন পায় বর্তমান সরকারের আমলে।

আরও পড়ুন: ড্যাফোডিলসহ অবৈধ ভবনে ৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

অপরদিকে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি, ইউজিসি সম্প্রতি এরূপ ১৮টিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। ইউজিসি মনে করছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইন লঙ্ঘন করেছে। এজন্য তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে নোটিশে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই জবাব দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

ইউজিসির পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) মো. ওমর ফারুক বলেন, আইনের শর্ত লংঘনকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আইনের আওতায় আনা হবে। আইন প্রতিপালনে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সচেতন করার উদ্দেশ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ বিবেচনায় রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ