ক্যান্সারের কাছে হেরে গেলেন গবি ছাত্রী লিজু

পারিবারিক কবরস্থানে লিজুর মরদেহ দাফন করা হয়
পারিবারিক কবরস্থানে লিজুর মরদেহ দাফন করা হয়  © সংগৃহীত

মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে হার মানলেন সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) মেধাবী ছাত্রী ফাহিমা আক্তার লিজু। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ২০মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে এই মেধাবীর জীবনাবাসন ঘটে। পরে রাত ১টায় লিজুর মরদেহ জন্মস্থান হবিগঞ্জ সদরের উত্তর নোয়াপাড়া গ্রামে নেওয়া হলে পরের দিন (বুধবার) সকাল ১০টায় জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করা হয়৷

লিজু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের ৩য় ব্যাচের শিক্ষাার্থী ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ২৪ বছর।

লিজুর হঠাৎ এমন চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কেউই। লিজুর সহপাঠীরা বলেন, শুরু থেকেই আমরা তাকে একজন ধার্মিক মেয়ে হিসেবে পেয়েছি। নিয়মিত পর্দা করতো, নামাজ পড়তো। পড়ালেখায় দারুণ মেধাবী ছিল। কারো সঙ্গে অহেতুক ঝামেলায় যেত না। আমরা তার এমন মৃত্যুতে অত্যন্ত শোকাহত।

ভেটেরিনারি অনুষদের এনিমেল প্রোডাকশন বিভাগের প্রধান ডা. মো. আব্দুর রহমান বলেন, সৎ সাহসিকতা এবং পরিশ্রমী মেয়ে ছিল লিজু। একজন মেধাবী স্টুডেন্টের মধ্যে যা থাকা দরকার, তার মধ্যে প্রত্যেকটা গুণাবলিই বিদ্যমান ছিল। লিজু একজন মেয়ে হয়েও একজন ভেটেনারিয়ান হিসেবে নিজেকে তৈরি করছিল। আমরা তাকে নিয়ে সবাই আশাবাদী ছিলাম।

তিনি আরও বলেন, লিজুর একাডেমিক রেজাল্টও গতানুগতিকভাবে ভালো ছিল। আমরা একজন ব্রিলিয়ান্ট অ্যান্ড মোর অথিমিস্টিক ছাত্রীকে হারিয়ে ফেললাম। ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সাইন্সেস ফ্যাকাল্টির প্রত্যেক শিক্ষকই তার ব্যাপারে যথেষ্ট পজিটিভ এবং আন্তরিক ছিল। শুধু শিক্ষকরাই নয়! লিজুর বন্ধু-সহপাঠী, জুনিয়র এবং সিনিয়র যারা আছে, যারা লিজুকে সরাসরি দেখেছে ও পেয়েছে। আমার মনে হয়- প্রত্যেকেই একটি কথা বলবে।

লিজুর পরিবার ও স্বজনেরা জানান, লিজুকে বাঁচাতে অনেক অর্থের প্রয়োজন ছিল৷ তাকে বাঁচাতে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। সহযোগিতা করেছেন। তবুও লিজুকে বাঁচানো গেল না৷ ৩ মাস ধরে ঢাকার বিএসএমএমইউ হাসপাতালে মৃত্যু সাথে যুদ্ধ করেছে লিজু।

তারা আরও বলেন, ৩ মাসে তার চিকিৎসা ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ টাকার বেশি৷ লিজুর বিশ্ববিদ্যালয়, অনুষদ ও আত্মীয় স্বজন মিলে এই অর্থ জোগাড় করা হয়। সবাই লিজু জন্য দোয়া করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ক্যাপ্টেন (অবঃ) ড. মো. জিয়াউল আহসান বলেন, লিজুর মৃত্যু একটি মর্মান্তিক ঘটনা। লিজুর মৃত্যু তার পরিবারের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে আমরা গভীর সমবেদনা জানাই।


সর্বশেষ সংবাদ