‘গণমাধ্যমের সময়োপযোগী পরিবর্তনের জন্য সবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে’

‘নবম বাংলাদেশ নেটওয়ার্কিং কনফারেন্সে’ আলোচকরা

‘নবম সিজেন বাংলাদেশ নেটওয়ার্কিং কনফারেন্সে’ অতিথিদের সঙ্গে অংশগ্রহণকারীরা।
‘নবম সিজেন বাংলাদেশ নেটওয়ার্কিং কনফারেন্সে’ অতিথিদের সঙ্গে অংশগ্রহণকারীরা।  © সৌজন্যে প্রাপ্ত

‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম তার মৌলিক কাঠামোয় কাজ করতে পারছে না। এখানে গণমাধ্যম ক্ষমতা কাঠামোর উদ্দেশ্যে পরিচালিত বা প্রণোদিত হয়। গণমাধ্যম গণমানুষের হতে পারেনি। তাই, গণমাধ্যমকে গণমানুষের করার জন্য সবার একসাথে কাজ করতে হবে। গণমাধ্যম ইন্ডাস্ট্রি, শিখন প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্টদের আরও কাছাকাছি বাস্তব অবস্থাকে উপলব্ধি করতে হবে।’

দেশের প্রথম বেসরকারি উচ্চশিক্ষালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) ‘নবম সিজেন বাংলাদেশ নেটওয়ার্কিং কনফারেন্স’র শেষদিনে আলোচকরা এসব কথা বলেন। এর আগে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট হলে দু'দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা'র প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম।

কনফারেন্সে উপস্থিতি ছিল গণমাধ্যম শিক্ষালয়গুলোর শিক্ষকদেরও। টিডিসি ফটো।

বুধবার ‘এথিকাল কনসিডারেশন ইন নিউ জার্নালিজম এডুকেশন’ সেশন দিয়ে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের সেশন শুরু হয়। দিনের প্রথম সেশনের মডারেটর হিসেবে আলোচনা শুরু করেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) এমসিজে প্রোগ্রামের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস. এম রিজওয়ান-উল-আলম। 

দু’দিনব্যাপী এ আয়োজনের বিভিন্ন সেশনে বক্তারা গণমাধ্যমের নানা সংকট তুলে ধরেন। পাশাপাশি তারা এ সংকট উত্তরণে দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন: নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে দুইদিনব্যাপী ‘নেটওয়ার্কিং কনফারেন্স’ শুরু

আলোচনার শুরুতে শিক্ষকদের নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ড. রিজওয়ান-উল-আলম। এদিন প্রথম সেশনে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন যমুনা টিভির স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট আলমগীর স্বপন, স্টেট ইউনিভার্সিটির এমসিজে বিভাগের প্রধান মো. শামসুল ইসলাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হক।

বুধবার দ্বিতীয় সেশনে ‘জেন-জি, মিডিয়া কনসাফশন অ্যান্ড পার্টসিপেশন’ বিষয় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আলোচকরা। এ সেশনে মডারেটর হিসেবে ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) এমসিজে প্রোগ্রামের সহযোগী অধ্যাপক ড. শরিফুল ইসলাম ইমশিয়াত। এ সেশনে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মোরশেদুল আলম।

‘নবম সিজেন বাংলাদেশ নেটওয়ার্কিং কনফারেন্স’র শেষদিনেও উপস্থিতি ছিল দেশের গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের। টিডিসি ফটো।

এছাড়াও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) এমসিজে বিভাগের প্রধান ড. শেখ শফিউল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান, প্রথম আলোর ডিজিটাল বিজনেসের প্রধান এবিএম জাবেদ সুলতান পিয়াস এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান ড. আফতাব হোসাইন।

এবারের সম্মেলনের স্লোগান ছিল ‘ব্রেকিং বাউন্ডারিস: জেন-জি, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড নিউ জার্নালিজম এডুকেশন এপ্রোচেস’। জার্মানভিত্তিক মিডিয়া ইন্সটিটিউট ডয়েচে ভেলে একাডেমিয়া, জার্মান কর্পোরেশন, সিজেন বাংলাদেশ এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম (এমসিজে)-প্রোগ্রামের যৌথ আয়োজনে এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরও পড়ুন: সরকার গণমাধ্যমের ওপর কোনো চাপ প্রয়োগ করবে না: প্রেস সচিব

বুধবার দিনের শেষ সেশনে ‘জেন্ডার রিলেশন্স ইন মিডিয়া অ্যান্ড জার্নালিজম’ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেশনটিতে মডারেটর হিসেবে ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) এমসিজে প্রোগ্রামের প্রভাষক নুসরাত ইসলাম। এ সেশনে আলোচক হিসেবে ছিলেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির জেএমসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনিরা শর্মিন, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ'র আফরোজা সোমা, পাঠশালা'র ফ্যাকাল্টি জান্নাতুল মাওয়া, কুবির এমসিজে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম. আনিসুল ইসলাম এবং নগদের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রধান মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম। 

দু'দিনব্যাপী আয়োজনের শেষদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে করনীয় এবং নতুন ধারণা চাওয়া হয় অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে। ডয়েচে ভেলে একাডেমিয়া’র ইন্টারন্যাশনাল কনসালটেন্ট ড. জুড ডব্লুভিইউ. আর. জেনিলো এ সেশনটি মডারেট করেন এবং এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক পর্দা নামে 'নবম সিজেন বাংলাদেশ নেটওয়ার্কিং কনফারেন্স'র।

দু'দিনব্যাপী এ সম্মেলনে দেশের শীর্ষ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং গবেষকরা অংশগ্রহণ করেছেন, যারা গণমাধ্যমের সাথে জড়িত রয়েছেন। তারা গণমাধ্যম এবং গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় তুলে ধরেছেন, যা নীতি-কৌশল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিখন কাঠামোয় সহায়ক হবে।


সর্বশেষ সংবাদ