২২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:৫২

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি হারিয়ে যা বললেন আসিফ মাহতাব

আসিফ মাহতাব  © সংগৃহীত

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আজ সোমবার (২২ জানুয়ারি) এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে চাকরিচ্যুত হওয়া নিয়ে বিস্তারিত জানান আসিফ মাহতাব নিজেই। 

তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে আমাকে একজন ফোন দিয়ে বলে, আপনার কন্ট্রাক্ট তো আপনি সাইন করেননি এখনো। কাল থেকে আপনার আর আসা লাগবে না। আপনাকে পরে জানানো হবে। তারপর সকালে আমি কোর্স কো-অর্ডিনেটরকে জিজ্ঞেস করলাম এ বিষয়ে যে এটা কি কোনো প্র্যাঙ্ক কল কিনা। কিন্তু তিনি বলেন না এ বিষয়ে আমাদেরও জানানো হয়েছে।’ 

আরও পড়ুন: নতুন শিক্ষাক্রমের সমালোচনা করে চাকরি হারাচ্ছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক!

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে আমার বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর উনারা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়। যেখানে এর আগেরদিনও আমি ক্লাস নিয়েছি। তারপর আমাকে রাত বারোটায় কল দিয়ে বললো আসতে হবে না। আমি জানি না এটা কী ধরনের পেশাদারিত্ব। 

আসিফ মাহতাব বলেন, এটা পুরোপুরি বৈষম্য। অন্যকোনো শিক্ষকের সাথে তো করা হয়নি। আমার সাথে কেন করা হয়েছে? আমার দর্শন, আমার ধর্মের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে। শুধু তাদের ধরনের দর্শনের মানুষেই থাকতে পারবে, অন্য দর্শনের মানুষ যারা আছে তারা তাদের মতো চলতে হবে। 

আরও পড়ুন: আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুত করা নিয়ে যা বললো ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

‘আমি যতটুকু জানি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের দর্শনের মানুষ থাকতে পারে। তারা নিজেদের আইডিয়া দিবেন, চিন্তা-ভাবনা শেয়ার করবেন। এটা তো হচ্ছে না। শুধু তাদের দর্শনের মানুষকেই রাখছে।’ 

‘চাকরিচ্যুত এখনো সরাসরি বলেনি। বলেছেন কালকে থেকে ক্লাসে আসা লাগবে না। বিস্তারিত তারা আমাকে পরে জানাবে। হিজড়া হচ্ছে ইন্টারসেক্স যারা জন্মগতভাবে কিছু শরীরের অংশ ব্যতিক্রম। সাধারণত যে লিঙ্গ সেটা থেকে তারা জেনেটিক কারণে একটু ব্যতিক্রম হয় সেটা আমরা বলি হিজড়া। ট্রান্সজেন্ডার হচ্ছেন যারা একদম সুস্থ নারী-পুরুষ যে নিজেকে বিপরীত লিঙ্গ মনে করে। ট্রান্সজেন্ডার নামের যে ছেলেরা মেয়ে সেজে হিজড়াদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে সেটার বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই কথা বলবো।’

আরও পড়ুন: ‘শরীফ’ থেকে ‘শরীফা’ হওয়ার গল্প পাঠ্যবই থেকে ছিঁড়ে প্রতিবাদ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের

‘তারা বিশ্বাস করে মানুষের দেহ বা শরীর কিছু নয় মনে মনে সে যেটা বিশ্বাস করে সেটাই বড়। কেউ যদি মনে মনে বিশ্বাস করে তার মেয়েলি আচরণ তার ভালো লাগে তাহলে সে নারী।’ 

সবশেষে তিনি বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রের শিক্ষার বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। আমার রাষ্ট্রের বইয়ে যদি এসব বিষয় বলা হয় আমি বলবো রাষ্ট্র ভুল করছে। রাষ্ট্রের ভুল আমি শুধরে দিতে চাই। আমি চাই রাষ্ট্রের যেন উন্নতি হোক। আমি চাই যত দ্রুত সম্ভব এ বইগুলো তুলে ফেলা। আমার প্রতিবাদ করার একটাই কারণ, রাষ্ট্র যেন ভুল বুঝে তা শুধরে ফেলে।’