পর্যটন খাতের উচ্চশিক্ষায় দেশেই মিলছে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা
- খাঁন মুহাম্মদ মামুন
- প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:১২ PM , আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:১৮ PM
করোনা মহামারি পরবর্তী বিশ্বে যে পাঁচটি খাতকে ব্যাপক ও বহুমাত্রিকতার সঙ্গে আর্থ-সামাজিক কাঠামোয় গতি সঞ্চারে ভূমিকা রাখবে বলে ধরা হচ্ছে তার অন্যতম একটি পর্যটন খাত। শুধু তাই নয়, অভ্যন্তরীণ পর্যটনে বিশ্বের যেসব দেশ ক্রমবর্ধনশীল এবং সাফল্যের সম্ভাবনায় উদ্ভাসিত—তার মধ্যে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ফলে মহামারির সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশের নতুন সম্ভাবনার পর্যটন খাতেও প্রতিনিয়তই বাড়ছে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা।
ফলে খাতটির চাহিদা পূরণে বাড়ছে উচ্চশিক্ষার কদরও। প্রয়োজনীয় শিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষা নিশ্চিতে বর্তমানে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে সরকারি-বেসরকারি উচ্চশিক্ষালয়ের পাশাপাশি দেশেই সুযোগ রয়েছে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ।
আরও পড়ুন: ট্যুরিজম বিভাগকে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সংযুক্তির দাবি
দেশের পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোভিড সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় অনেকটাই এগিয়েছেন তারা। ফলে নতুন করে এ খাতের বিভিন্ন বিভাগে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলের চাহিদা বাড়ছে। বর্তমানে দেশের প্রথম সারির এবং তারকা মানের হোটেল, মোটেল-রেস্তোরাসহ সংশ্লিষ্ট নানা খাতে দেশি-বিদেশি দক্ষ জনবলের চাহিদার কথা জানিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, পর্যটন প্রতিষ্ঠানে প্রিমিয়াম মানের সেবায় নিয়োগের ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষিত ও দক্ষরা এগিয়ে থাকে। স্বভাবতই ট্যুরিজমের মত বিষয়গুলোয় স্নাতক-স্নাতকোত্তরধারীরা প্রাধান্য পান।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, দেশের উচ্চশিক্ষার প্রেক্ষিত বিচারে প্রতিনিয়তই ক্রমবর্ধনশীল পর্যটন খাতের শিখনক্ষেত্র ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চাহিদা বাড়ছে। ফলে এ খাতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের বিষয়টি বিবেচনায় নিচ্ছে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও। বর্তমানে দেশের পাবলিক বা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি সুযোগ রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষালয়ে পড়াশোনার সুযোগ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপন
বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। ঢাবির ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিজ থেকে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে নিয়মিত এমবিএ প্রোগ্রামের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সান্ধ্যকালীন কোর্সে পড়ার সুযোগ। ঢাবির পাশাপাশি দেশে এ বিষয়ে ঢাবির পাশাপাশি ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) নেয়ার সুযোগ রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও।
এছাড়াও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশেও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে চায় ইউসিএসআই
সুযোগ রয়েছে দেশে বসে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ারও। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ‘হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট’ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিচ্ছে মালয়েশিয়ার প্রথম বেসরকারি উচ্চশিক্ষালয় ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ সেদায়া ইন্টারন্যাশনাল (ইউসিএসআই)-এর বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাস’। এর বাইরে দেশের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে স্নাতক করার সুযোগ রয়েছে।
ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট নিয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্সও করা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
পড়াশোনার ক্ষেত্রফল
সাধারণত ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আওতায় পড়ানো হয় চারটি মূল বিষয়। এর ফ্রন্ট অফিস ম্যানেজমেন্ট, হাউস কিপিং ম্যানেজমেন্ট, কালিনারি আর্টস বা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাকশন আর ফুড অ্যান্ড বেভারেজ সার্ভিস ম্যানেজমেন্টে দক্ষতার উন্নয়ন করা হয় শিক্ষার্থীদের। এর বাইরে শেখার সুযোগ রয়েছে ট্রাভেল ম্যানেজমেন্ট, রিক্রিয়েশন ম্যানেজমেন্ট, লেইজার ম্যানেজমেন্টের মতো আনন্দদায়ক বিষয়গুলোও।
যা রয়েছে এই আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম বিভাগে
বিশ্বের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় অন্যতম উচ্চশিক্ষালয় ইউসিএসআই। বিশ্বের সেরা ১ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় থাকা ইউসিএসআই সম্প্রতি তাদের বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে থেকেই শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক একটি প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের দ্বার উন্মোচিত হলো। কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে বিষয় বিবেচনায় ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ইউসিএসআই’র বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থান ৩৪তম।
ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাসের স্মার্ট ক্লাসরুম
এছাড়াও ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা সুযোগ পাবেন দেশের শীর্ষস্থানীয় স্টার মানের হোটেলগুলোয় কাজের সুযোগ। এক্ষেত্রে হোটেল পার্ল এবং হলি ডে ইনন এর মতো তারকা মানের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি কাজের সুযোগ পাবেন এখান শিক্ষার্থীরা। এর বাইরে ইউসিএসআই’র সদস্যপদ রয়েছে সুইজারল্যান্ডের বিশ্বখ্যাত ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের; যারা দেশটির শীর্ষ এবং ইউরোপের চতুর্থ শীর্ষ শিক্ষাঙ্গণ হিসেবে বিবেচিত। ফলে তাদের সাথেও কাজ এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা।
এখানে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবের পাশাপাশি শেখার সুযোগ পাবেন দেশীয় এবং মালয়েশিয়ার মূল ক্যাম্পাসের শিক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কদের অধীনে নিজেকে গড়ে তোলার। ক্রেডিট ট্রান্সফার করে মূল ক্যাম্পাসে যাওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা চাইলে যেতে পারবেন দেশের বাইরের অন্য যেকোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও। আর শিখন-পাঠন শেষে শতভাগ কাজের নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নতুন করে ব্যক্ত করছে এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও।
আরও পড়ুন: ঢাবির ট্যুরিজম বিভাগের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাসের হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক মো. ইজহারুল হক মনে করেন, দেশের তরুণদের এখন উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে আগামীর বাজার ব্যবস্থা চিন্তা করা উচিত। সেজন্য তরুণদের প্রতি এই শিক্ষকের পরামর্শ যেসব খাতে নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে বা হবে সেসব খাতে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা গ্রহণ করার।
চ্যান জো জিম
তিনি বলেন, দেশ এবং দেশের বাইরের পর্যটন খাতে নতুন অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বাংলাদেশে তা আরও বাড়বে জানিয়ে তিনি বলেন, সামগ্রিক বিবেচনায় হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট উচ্চশিক্ষার আদর্শ বিষয় হতে পারে। আর ইউসিএসআই শিক্ষার্থীদের হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্টে সর্বোচ্চ মানের শিক্ষার নিশ্চয়তা দিচ্ছে—যেন তারা শেখার পাশাপাশি তার কাঙ্ক্ষিত পেশায় যোগদানের জন্য প্রস্তুত হতে পারে।
ইউসিএসআই বাংলাদেশে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে চায় বলে জানিয়েছেন উচ্চশিক্ষালয়টির বাংলাদেশ ব্রাঞ্চের প্রভোস্ট এবং হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্টে বিভাগের সমন্বয়ক (কো-অর্ডিনেটর) চ্যান জো জিম। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট উচ্চশিক্ষায় বিষয়ভিত্তিক বৈশ্বিক অবস্থানে ৩৪তম অবস্থানে রয়েছি। আমাদের সে ভালো অবস্থান ধরে রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাসেবার প্রতিশ্রুতি প্রদান করছি। এখানে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে শিক্ষক, ল্যাব, বাস্তবভিত্তিক অভিজ্ঞতার জন্য সরাসরি এখাতের প্রতিষ্ঠানগুলোয় কাজের সুযোগসহ সংশ্লিষ্ট সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
আরও পড়ুন: জটিলতায় বিদেশে উচ্চশিক্ষা, পথ দেখাচ্ছে দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়
চ্যান জো জিম বলেন, আমাদের হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা আতিথেয়তা, পর্যটন, অবসর, ভ্রমণ, রন্ধনশিল্প, বিনোদন এবং ইভেন্টের বিশেষ ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সরাসরি শেখার সুযোগ পাবে। আমরা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য এ কাজের সুযোগ এবং নিশ্চয়তা আরও বাড়াতে চেষ্টা করছি। সেজন্য বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আরও বেশি অংশীদারিত্ব বাড়াতে কাজ করছি।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সালেহ জাফর
ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাসের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সালেহ জাফর বলেন, বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল শিল্পগুলোর জন্য এখন দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে। এর মধ্যে পর্যটনের মতো খাতে যেন বাংলাদেশের তরুণরা নেতৃত্ব দিতে পারে সেজন্য আমরা হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্টে বিভাগে শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষার নিশ্চয়তা দিচ্ছি। এখানে শিক্ষার্থীরা বাস্তবভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়নের জন্য হাতে-কলমে শেখার পাশাপাশি সময়োপযোগী উচ্চশিক্ষা পাবে।
কাজের ক্ষেত্র
দেশে প্রতিনিয়তই বাড়ছে আন্তর্জাতিক মানের নতুন সব চেইন হোটেল। বর্তমানে পারিবারিক বিনোদনকেন্দ্রগুলোর নতুন অংশ হয়ে উঠছে রিসোর্টগুলো। এর বাইরে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র, পর্যটনসমৃদ্ধ এলাকা ছাড়াও সুযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এছাড়াও বাংলাদেশ বিমান থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমানে কেবিন ক্রু, স্টুয়ার্ড, আন্তর্জাতিক মানের হোটেলে সুপারভাইজার পর্যায়েও কাজ করার সুযোগ রয়েছে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের বিদ্যার্থীদের। ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে উচ্চশিক্ষার পর আতিথেয়তা, পর্যটন, অবসর, ভ্রমণ, রন্ধনশিল্প, বিনোদন এবং বিভিন্ন ইভেন্টে কাজের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে পর্যটনকেন্দ্রিক পড়াশোনায় আধুনিক শিক্ষাক্রম, হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং পর্যটন-ভিত্তিক দেশি-বিদেশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ নিশ্চয়তা দিতে পারে এ খাতের বিদ্যার্থীদের। সেজন্য জোর দিতে হবে মানসম্মত পাঠক্রমের পাশাপাশি খাত সংশ্লিষ্ট বাস্তবিক কাজের ক্ষেত্রেও। ফলে এ খাতে আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।
দেশের পর্যটন এবং এখাতে উচ্চশিক্ষা নিয়ে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামশাদ নওরীনের সাথে। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে এবং দেশের বাইরে পর্যটন এবং সংশ্লিষ্ট খাতে উচ্চশিক্ষার কদর বাড়ছে। বাংলাদেশে ইকোনমিক জোনসহ বিভিন্ন খাতেই ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে। সেজন্য নিশ্চিত করতে হবে আন্তর্জাতিক মানের পাঠদান।
দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি হাতে-কলমে শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে জানিয়ে এই শিক্ষক বলেন, আমাদের পাশের দেশগুলো এ খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে পেরেছে তাদের পাঠ্যক্রম এবং সংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে। এখাতে এখন বিভিন্ন ধরনের অটোমেশন হচ্ছে, সেজন্য এখাতে শিক্ষার্থীদের শিখনকালীন সময়ে বিভিন্ন ধরনের প্রাযুক্তিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও পাঠ্যসূচির আধুনিকায়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে হবে ল্যাবভিত্তিক বাস্তবসম্মত শিখন-পাঠনে।
অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া মনে করেন, দেশেই বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ জনসম্পদ তৈরি করা সম্ভব। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানের কারিকুলাম নিশ্চিত করতে পেরেছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার বাইরে আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ, নীতিগত সহায়তা, পর্যটনে যারা গবেষণা করছেন তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্ব এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধি করা দরকার। এর ফলে আমাদের শিক্ষার্থীদের এ খাতে কাজের নিশ্চয়তা তৈরি হবে বলেও মনে করেন তিনি।