নতুন গ্রেডে বেতন কমে গেছে লক্ষাধিক প্রাথমিক শিক্ষকের

নতুন গ্রেডে বেতন কমে গেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লক্ষাধিক শিক্ষকের
নতুন গ্রেডে বেতন কমে গেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লক্ষাধিক শিক্ষকের  © ফাইল ফটো

বেতন বাড়ানোর উদ্দেশ্য থাকলেও নতুন স্কেলে কমে যাচ্ছে লক্ষাধিক প্রাথমিক শিক্ষকের বেতন। ১৩তম গ্রেডে সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণে তৈরি হয়েছে এই অচলাবস্থা। প্রশিক্ষণ না থাকা শিক্ষকদের চেয়ে বেতন কমে গেছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের। জ্যেষ্ঠদের বেতন হয়েছে কনিষ্ঠদের চেয়েও কম। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আগে যোগদানকারীরা।

অথচ প্রাথমিকে প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। এ জন্য আলাদা গ্রেডও পেতেন তারা। কিন্তু জাতীয় বেতন কাঠামোর ১৩তম গ্রেড দেওয়ার পর প্রশিক্ষণ গ্রেড উঠিয়ে দেয় সরকার। এখন সবার এই গ্রেডে বেতন পাওয়ার কথা। এটি নিয়েই তৈরি হয়েছে জটিলতা। এভাবে বেতন কমে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লক্ষাধিক শিক্ষক।

জানা গেছে, দেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন তিন লাখ ৫২ হাজার সহকারী শিক্ষক। এরমধ্যে অর্ধেকই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে ১৩তম গ্রেডে বেতন দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপরই এই গ্রেডের সুবিধা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।

নিয়মানুযায়ী নিম্ন ধাপে ফিক্সেশন করলে বেতন কমে যাচ্ছিল শিক্ষকদের। তবে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের হস্তক্ষেপে উচ্চ ধাপে ফিক্সেশন করায় সে জটিলতা কেটেছে। কিন্তু এবার দেখা দিয়েছে নতুন জটিলতা। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বেতন কমে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে অসন্তোষ।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। অর্থ সচিবও সমাধানের কথা বলেছেন। তবে আদেশের কাগজ আমার কাছে আসতে হবে। এখন বাজেটের কারণে অর্থ মন্ত্রণালয় ব্যস্ত। আশা করি, আগামী ৩০ জুনের পর তারা এ নিয়ে কাজ করবে।’ এ সমস্যা সমাধানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলেও জানান তিনি।

সূত্র জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘আইবাস প্লাস প্লাস’ সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেতন ফিক্সেশন হয়। কিন্তু এতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের আলাদা গ্রেড নেই। অথচ প্রাথমিকে প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকেরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের চেয়ে বেতন পেয়ে থাকেন এক গ্রেড নিচে।

শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, আগের পে-স্কেলগুলোয় বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট হতো স্কেলভিত্তিক। তখন মূল বেতন সাময়িকভাবে কমলেও ইনক্রিমেন্ট বেড়ে যাওয়ায় সাময়িক ক্ষতি পুষিয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট হয়। তাই গ্রেড ওপরে থাকলেও মূল বেতনে কেউ পেছনে পড়লে আর ক্ষতি পোষানোর সুযোগ থাকে না। ফলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।


সর্বশেষ সংবাদ