মেধা বিকাশে বিনামূল্যে দুধ পাচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীরা

প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য এলডিডিপ’র মিল্ক কার্যক্রম
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য এলডিডিপ’র মিল্ক কার্যক্রম  © সংগৃহীত

মেধা বিকাশ এবং প্রান্তিক অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের স্কুলগামী করতে মিল্ক কার্যক্রম চালু করেছে সরকার। চলতি বছরের ১৩ আগস্ট থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের (এলডিডিপি) আওতায় ভোলার লালমোহনের ৬৪নং উত্তর কালমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল এ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। প্রতি ১০ দিন পর পর শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ে এসব দুধ পৌঁছে দেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউএইচটি মিল্ক।

জানা যায়, ভোলার লালমোহনে শিশু শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের লক্ষ্যে প্রতিদিন দেওয়া হয় বিনামূল্যে দুধ। উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৪ নং উত্তর কালমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২২১ জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন প্যাকেটের দুইশত মিলি লিটার তরল দুধ পাচ্ছে। এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ার পাশাপাশি পড়ালেখার প্রতি মনোযোগীও হচ্ছে তারা বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে স্কুল মিল্ক কর্মসূচি চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে দুধ পাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দুই ভাগে এই দুধ প্রদান করা হয়। এরমধ্যে শিশু, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দুপুর ১২টার মধ্যে দুধ দেওয়া হয়। আর তৃতীয়, চতূর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দুধ দেওয়া হয় দুপুর ১টার দিকে। এসব দুধ বাসায় নেয়ার সুযোগ নেই। বিদ্যালয়ে থেকেই সব শিক্ষার্থীকে এ দুধ পান করতে হয়। কারণ প্রতিদিন কতজন শিক্ষার্থী দুধ পেয়েছে শ্রেণিভিত্তিক তার হিসাব রাখা হয়। আমরা নিয়মিত সঠিক ভাবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুধ বিতরণ করছি।’

বিদ্যালয়লটির প্রধান শিক্ষিকা বিথীকা রাণী দত্ত জানান, ‘শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়মিত বিনামূল্যে দুধ প্রদানের উদ্যোগটি মহৎ। এতে করে শিশুদের মেধার বিকাশ ঘটবে। এরমধ্যেই বিদ্যালয়টিতে স্কুল মিল্ক কর্মসূচি চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে। পড়ালেখার প্রতিও শিশুদের মনোযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে বিগত বছরগুলোর থেকেও এ বছর বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার মান আরও বাড়বে।’

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আকতারুজ্জামান মিলন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে উপজেলার কেবল একটি বিদ্যালয়ে এ স্কুল মিল্ক কর্মসূচি চালু হয়েছে। এর ফলে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি বেড়েছে। এই প্রকল্পটি সরকারের অনন্য উদ্যোগ। পর্যায়ক্রমে লালমোহনের প্রতিটি বিদ্যালয়ে যদি এ কর্মসূচি চালু করা হয় তাহলে উপজেলাতে শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে। যার মাধ্যমে আগামীতে দেশে গড়ে উঠবে আরো সুশিক্ষিত প্রজন্ম।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জয়া ধর মুমু জানান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় লালমোহনের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছরের জন্য স্কুল মিল্ক কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এটি সরকারের পাইলট প্রকল্প। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য প্রান্তিক এলাকার শিশু শিক্ষার্থীদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও মেধার বিকাশ ঘটানো। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য সফল হলে পরবর্তীতে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে এই কর্মসূচি চালু করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ