শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ বিদ্যালয়ের সভাপতির

শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ বিদ্যালয়ের সভাপতির
শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ বিদ্যালয়ের সভাপতির  © ফাইল ছবি

নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ জানিয়েছের বিদ্যালয়টির সভাপতি।

অভিযোগে জানানো হয়েছে, বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কামরুল হাসান নিজ ক্ষমতার প্রভাব কাটিয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ের পাঠদান চলাকালীন সময়ে তিনি তার কোচিং সেন্টার পরিচালনায় ব্যস্ত থাকেন। দিনের ১২টার পরেই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা তার কোচিং সেন্টারে চলে যায়। কাউকে তোয়াক্কা না করে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুদের দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই কোচিং সেন্টারে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রীর অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়ের কোন ছাত্র-ছাত্রী যদি তার কোচিং এ প্রাইভেট পড়তে না চায় তবে তিনি সেই ছাত্রকে পরীক্ষায় নম্বর কম দেন। সেই ভয়ে নিরুপায় হয়েই তার কোচিং সেন্টারেই আমার সন্তানকে পড়াতে দেই।

এ নিয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন মাতু জানান, শিক্ষক কামরুল হাসানের কোচিং বাণিজ্যের কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদানে ব্যাহত হয়। তার শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণে বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা বিস্মিত। এ ছাড়াও দু’ একজন শিক্ষক আছেন ৯:৩০ মিনিটের হাজিরায় ৩:৩০ মিনিট হাজিরা দেখিয়ে স্বাক্ষর করে চলে যান। 

তিনি জানান, এই দৃশ্যমান অনিয়ম পাঠদান ব্যাহত দেখে গত ২৮ শে মার্চ স্থানীয় এমপি স্বাক্ষরিত একটি ডিও পত্রের মাধ্যমে আমি একটি অভিযোগপত্রের অনুলিপি ময়মনসিংহ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ বরাবরে জমা দেই।সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুদের হাতে হাতে প্ল্যাকার্ড পেস্টুন ধরিয়ে দিয়ে দুই ঘণ্টা রাস্তায় মিছিল দেওয়া হয়। 

এতেও থেমে থাকেনি শিক্ষক কামরুল হাসান আমাকে গত রবিবার (১৪ মে) জোরপূর্বক চাপসৃষ্টি করে আমি যেন আমার অভিযোগ তুলে নেই লিখিত ভাবে। তবে সোমবার (১৫ মে) এমপি মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, তদন্ত মোতাবেক অভিযোগের সত্যতা যাচাই বাচাই পূর্বক ব্যবস্থা নিবেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ—বলছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রবীর কুমার সরকার জানান, দেখেন আমার সময় শেষ, এ মাসের ২৩ তারিখে আমি অবসরে যাবো, এই ক’দিনে অনেক চেষ্টা করেছি এই বিরোধ নিরসনে, কেউ আমার কথা শুনেনি, আমি কি সম্মানের সহিত বিদায় নিতে পারবো-সেই চিন্তায় আছি।

অভিযুক্ত শিক্ষক কামরুল হাসানের কাছে অভিযোগের সত্যতা জানতে চাইলে তিনি জানান, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বানোয়াট অসত্য। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ এনেছে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।

কলমাকান্দা উপজেলা প্রাথমিক  শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা  অফিস থেকে শিক্ষক কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য একটি অভিযোগ পত্র আমার কাছে পাঠিয়েছেন। আমি শীঘ্রই সঠিক  তদন্ত করে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিব।


সর্বশেষ সংবাদ