অপারেটররা হবেন প্রশিক্ষক, আন্দোলনের হুশিয়ারি ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের

আন্দোলনের হুশিয়ারি প্রাথমিকের শিক্ষকদের
আন্দোলনের হুশিয়ারি প্রাথমিকের শিক্ষকদের  © ফাইল ফটো

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য ভিন্ন ব্যবস্থা নিতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠি ইস্যু করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। সংস্থাটির মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে (ইউআরসি) কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের ‘সহকারী ইন্সট্রাক্টর’ পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে জানানো হয়েছিল। যা নিয়ে আপত্তি জানানোর পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিকের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টরা।

অধিদপ্তরের ওই চিঠি অনুযায়ী, ইউআরসিতে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের ‘সহকারী ইন্সট্রাক্টর’ পদে চলতি দায়িত্ব দিয়ে তাদের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কিন্তু, গ্রেড বিচারে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের তুলনায় কয়েক গ্রেড ওপরে রয়েছেন শিক্ষকরা। ফলে, কীভাবে এবং কোন কাঠামো বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা জানতে চান শিক্ষকরা।

সরকারের এমন উদ্যোগের পেছনে কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে জানিয়ে শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ইউআরসির ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা ‘নন একাডেমিক পদধারী’ হিসেবে কোনোভাবেই ‘একাডেমিক ট্রেইনার’ ও ‘একাডেমিক সুপারভাইজারে’র কোনো পদে চলতি দায়িত্ব বা পদোন্নতি পেতে পারেন না—এটি অযৌক্তিক।

এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি বদরুল আলম মুকুল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলছেন, এ সিদ্ধান্ত লজ্জাজনক; শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে কোনো পদোন্নতি পাচ্ছেনা না। অথচ ইউআরসির ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা ‘নন একাডেমিক পদধারী’হয়েও পদোন্নতি পাচ্ছেনা এবং তারা ১৬তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে যাচ্ছেন। এ নিয়ে আমাদের মিটিং থেকে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শামসুউদ্দিন মাসুদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না; একজন শিক্ষক ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের কাছে প্রশিক্ষণ নেবেন—এমন হলে শিক্ষকদের যে সম্মান এবং মর্যাদা থাকলে না।

তিনি বলন, আমার চাই অধিদপ্তর এ সিদ্ধান্ত বাতিল করুক; এ নিয়ে অধিদপ্তরে আমরা একটি আবেদন জামা দিয়েছি। তারা এটি বিবেচনা না করলে আমরা আন্দোলনে যাবো। এ নিয়ে সমিতির সবার মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিসুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করেও ১০ম গ্রেডে যেতে পারছে না। অথচ ডাটা এন্ট্রি অপারেটটরা ১৬তম গ্রেড থেকে ১০ গ্রেডে কিভাবে আসেন। এটি মানা যাবে না; এসএসসি পাশ শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে তারা কীভাবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষক হবেন—এমন প্রশ্নও তার।

তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য আমরা দাবি জানিয়েছে; সিদ্ধান্ত বাতিলের বিষয়ে শিক্ষকদের দাবি না শোনা হলে আমরা শিক্ষক সমাজ বসে পরবর্তী করনীয় ঠিক করবো। 

এ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ