নিখোঁজের ৬ দিন পর ঢামেকের আইসিইউতে মিলল শিক্ষার্থীর সন্ধান

মো: জুলফিকার আলি
মো: জুলফিকার আলি  © টিডিসি ফটো

গত ১৮ জুলাই উত্তরার ৩ নাম্বার সেক্টরে বাসা থেকে সকাল ১১ টায় বের হন মো: জুলফিকার আলি। উত্তরা নওয়াব হাবিবুল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের ১০ম শ্রেণীতে পড়েন জুলফিকার। অভাবের সংসারে খরচ মেটাতে পড়াশোনার পাশাপাশি জিলাপির দোকানে পার্ট টাইম কাজ করতেন এই শিক্ষার্থী। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় ৬ দিন নিখোঁজ থাকার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে সন্ধান মেলে জুলফিকারের। 

জানা যায়, ১৮ জুলাই জুলফিকারও শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেন। এক পর্যায়ে তার মাথায়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে এবং চোখে গুলি লাগে। ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকলে উপস্থিত অন্যরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্ত পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের কাছে কোন খবর পাঠানো সম্ভব হয়নি। ৬ দিন নিখোঁজের পর জ্ঞান ফিরলে জুলফিকার পরিবারের মোবাইল নাম্বার দলে হাসপাতাল কর্তপক্ষের প্রচেষ্টায় পরিবার তার সন্ধান পায়।

জুলফিকারের গ্রামের বাড়ি নওগা জেলায়। বাবা সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন। তার বড় ভাই একাদশ শ্রেণীতে পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, এখনও জুলফিকারের মাথায় কয়েকটি বুলেট থেকে গেছে। চোখের সমস্যাও গুরুতর। বর্তমানে আইসিউ থেকে বের করা হলেও চোখের চিকিৎসা চলমান রয়েছে। 

ছেলের সন্ধান পাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গেলে কান্নায় ভেঙে পড়েন জুলফিকারের মা মরিয়ম বেগম। তিনি জানান, ‘আমার অসহায় পরিবারকে দেখার কেউ নেই। আমি শারিরীতভাবে অসুস্থ। দুই ছেলেকে অনেক কষ্ট করেও পড়ালেখা করাতে চেয়েছিলাম। জুলফিকারের শরীরের অবস্থা কিছুটা ভালো, কিন্তু এখনও মাথা এবং চোখের অবস্থার কোন উন্নতি নাই। এই মুহুর্তে  আমার সহায়তা প্রয়োজন। জানি না, ছেলেটা আর কখনও চোখের আলো ফিরে পাবে কিনা। যখন ঔষধ দেই তখন বাম চোখে সামান্য তাকানোর চেষ্টা করলেও আবার বন্ধ করে ফেলে। কিন্তু আরেকটা চোখে কিছুই দেখতে পায় না। আমার সর্বনাশ হয়ে গেছে, আমাকে বাচাঁন।’


সর্বশেষ সংবাদ