‘তিনবার সুযোগ পেয়েও ঢাবির ভিসি হইনি’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২২, ১১:৩৬ PM , আপডেট: ২৩ জুন ২০২২, ১১:৩৬ PM
তিনবার সুযোগ পেয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হননি খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক ও ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত বলে ৮৭তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জানান তিনি।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমার বাবা চেয়েছিলেন আমি আমলা হই। কিন্তু আমলাতন্ত্রের প্রতি ছিল আমার প্রবল অনীহা। সেজন্য শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে তিনবার ভিসি পদের জন্য নির্বাচিত হই। কিন্তু ভিসি পদ অনেক জটিল প্রশাসনিক পদ। এখানে অনেকের অনেক রকম আবদারও মেঠাতে হয়, যেটা আমার দ্বারা অসম্ভব। সেজন্য সুযোগ থাকা স্বত্বেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়াতেই তিনবার সুযোগ পেয়েও ভিসি হইনি।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে খ্যাতনামা এই শিক্ষাবিদের ৮৭তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আত্মজৈবনিক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে সিরাজুল ইসলামের জীবনী পাঠ করা হয়। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ হতে তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৃটিশ উপনিবেশ, পাকিস্তানী শাসন এবং বাংলাদেশ তিন যুগ পার করছি আমরা। অথচ রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামোতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আমলাতান্ত্রিকতার ধাঁধা থেকে আমরা এখনো বের হতে পারিনি। রাষ্ট্রের বদল হয়েছে, উপনিবেশিকতার বদল হয়নি। জাতি সমস্যার সমাধান হয়েছে। কিন্তু শ্রেণি সমস্যার সমাধান হয়নি। এখনো শ্রেণিসংগ্রাম চলছে।
তিনি বলেন, হাজার হাজার বছর ধরে গড়া সভ্যতা এখন ক্রান্তিলগ্নে উপস্থিত। এর থেকে উত্তরণের জন্য সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। সামাজিক মালিকানাও ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের সংস্কৃতিতে বিদ্রোহ আছে, বিষন্নতা আছে। হতাশা-বিষন্নতা করোনার চেয়েও বেশি সংক্রমণ করে। এসব থেকে মুক্তির জন্য সামাজিক বিপ্লব ছাড়া কোনো পথ নেই।
নিজের কর্মজীবন সম্পর্কে এই শিক্ষাবিদ বলেন, আমার কাজকে আমি সাংস্কৃতিক আন্দোলন হিসেবে দেখি। বিভিন্ন আন্দোলনে যুক্ত হয়েছি কোনো রাজনৈতিক স্বার্থে নয়, অধিকার আদায়ের স্বার্থে।
নিজের জীবনের শেষ ইচ্ছে সম্পর্কে বলেন, একটা সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সংগঠন করতে চাই। পাঠাগার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সারাদেশব্যাপী আমাদের কর্মকান্ড ছড়িয়ে দিতে চাই। যেখানে কিশোররা সম্পৃক্ত হবে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক প্রতিযোগিতা হবে। তরুণরা জনহিতকর কাজ করবে। একটা সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিপ্লব সংঘটিত হবে।