মুসলিম নারীদের কোণঠাসা করা বন্ধ করুন, বিজেপিকে মালালা

নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই
নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই  © সংগৃহিত

ভারতের হিজাব বিতর্ক নিয়ে এবার সরব হলেন নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই। ঘটনাটিকে তিনি ‘ভয়ানক’ বলে উল্লেখ করে ভারতের মুসলিম নারীদের কোণঠাসা না করতে ভারতের ক্ষমতাসীন দল হিন্দুত্ববাদী বিজেপির রাজনীতিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে টুইটারে মালালা লিখেছেন, ‘হিজাব পরে মেয়েদের স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা ভয়ঙ্কর ঘটনা’।

এরপরই ভারতের রাজনীতিকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘মুসলিম নারীদের কোণঠাসা করার চেষ্টা এবার বন্ধ করুন আপনারা’।

এই প্রথম নয়। এর আগে ভারতের কৃষি আইন নিয়েও সরব হয়েছিলেন মালালা। কৃষকদের সমর্থনে মোদী সরকারের কাছে কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলেন। হিজাব নিয়ে একটি সংবাদ নেটমাধ্যমে প্রকাশ করে সেই বিষয়ে মুখ খুলেছেন মালালা।

হিজাব বিতর্কের আঁচ ইতিমধ্যেই কর্নাটক প্রদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে মধ্যপ্রদেশ এবং পুদুচেরিতে পৌঁছে গিয়েছে। বিতর্ক তো থামছেই না বরং আরও ক্ষোভের আঁচ বাড়ছে কর্নাটক জুড়ে। রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে কর্নাটক হাই কোর্ট।

হিজাব কেন পরতে দেওয়া হবে না তা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে হাই কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন মুসলিম শিক্ষার্থীরা। আদালতের কাছে তাঁরা আর্জি জানিয়েছেন হিজাব পরাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য।

দক্ষিণের এই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ না হয় তাই দেবাঙ্গিরি, শিমোগা, বাগালকোটের মতো উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। হিজাব বিতর্কের জেরে যে ভাবে রাজ্যে উত্তেজনা বাড়ছে, তা বিবেচনা করে তিন দিনের জন্য সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই।

স্কুলে কি হিজাব পরে আসা যায়? এই নিয়ে বিতর্কে মেতে উঠেছে দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্য। বিতর্কের সূত্রপাত, গত মাসে কর্নাটকের উদুপির একটি কলেজে হিজাব পরিহিত শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে না দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে। কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিজাব বাতিলের দাবিতে পথে নামে। এই বিষয় নিয়ে ব্যাপক গোলমাল শুরু হয়েছে ভারতের দক্ষিণের ওই রাজ্যে।

মুসলিম মেয়েরা হিজাব পরে আসায় হিন্দু ছাত্ররা গেরুয়া স্কার্ফ বা চাদর পরে স্কুলে আসছে। গেরুয়া স্কার্ফ পরিহিত ছাত্ররা জানিয়েছে যে বজরং দল, হিন্দু জাগরণ বেদি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এই স্কার্ফ দিয়েছে তাদেরকে।

হিজাব পরিহিত কিছু মুসলিম মেয়েকে উদুপির একটি সরকারি কলেজে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল গত ডিসেম্বরে। এরপর থেকে পরপর কলেজে নিষিদ্ধ হয়েছে হিজাব। এই আবহে বিতর্কে জল ঢালতে নির্দেশিকা জারি করে কর্ণাটক সরকার। সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, প্রি ইউনির্ভাসিটির আওতায় যে সরকারি কলেজগুলি রয়েছে সেখানে কলেজ ডেভেলপমেন্ট বোর্ড যে পোশাক নির্দিষ্ট করেছে সেটাই থাকবে। আর যেখানে এই পোশাক বিধি বলে কিছু নেই, সেখানে তারা এমন পোশাক পরতে পারেন যাতে করে সম্প্রীতি, সমতা ও আইন শৃঙ্খলা বজায় থাকে। তবে এই নির্দেশের পরও বিতর্ক থামেনি।


সর্বশেষ সংবাদ