মিয়ানমারে সেনাবাহিনীকে টাকা দিয়ে ফেরত নিতে হচ্ছে আপনজনের লাশ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২১, ০৬:১১ PM , আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২১, ০৬:১১ PM
মিয়ানমারে প্রতিনিয়ত চলছে মানবিক অবক্ষয়। নিহতদের পরিবারকে দেশটির সেনাবাহিনীর কাছ থেকে টাকা দিয়ে আপন জনের লাশ ফেরত নিতে হচ্ছে। ওই মানুষগুলো নিহত হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীরই হাতে। খবর সিএনএন ও এএপিপির।
বাগো ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করে, শুক্রবার যারা নিহত হয়েছেন, তাঁদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের জন্য পরিবারের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে মিয়ানমারের জান্তা। তারা লাশের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার মিয়ানমার কিয়াত আদায় করছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা প্রায় ৭ হাজার ২০০ টাকার সমান।
মিয়ানমারে দুই মাসের বেশি সময় ধরে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন চলছে। ওই বিক্ষোভ-প্রতিবাদে ৭০০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। এছাড়া সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভের জেরে তিন হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার (৯ এপ্রিল) ইয়াঙ্গুনের কাছের বাগো শহরে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের ওপর মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় ৮৩ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। অধিকার সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) এই তথ্য জানায়।
শহরটিতে বসবাসকারী এক প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএনএনকে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর শুক্রবারের রক্তক্ষয়ী অভিযানের পর শহর থেকে অনেক অধিবাসী পালিয়ে আশপাশের গ্রামগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছেন। নিরাপত্তা বাহিনী শহরের বিভিন্ন এলাকায় তৎপরতা ও তল্লাশি চালাচ্ছে। শুক্রবার থেকে শহরে ইন্টারনেট–সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দাবি করে, গত শুক্রবার বাগোয় নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের হামলার শিকার হয়েছিল। বাগোর সড়কে থাকা নানান প্রতিবন্ধকতা সরানোর কাজ করছিল নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা করে দাঙ্গাকারীরা। দাঙ্গাকারীরা হাতে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, গ্রেনেডসহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন সামরিক অভ্যুত্থান হয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। অং সান সু চিসহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয় । অভ্যুত্থানের পর জরুরি অবস্থা জারি হয় দেশটিতে। এখন মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে সেখানে টানা বিক্ষোভ চলছে।