এখনই স্কুল খুলে দেয়ার পরামর্শ জার্মান বিজ্ঞানীদের!

  © ডয়েচে ভেলে

স্কুল, দোকানবাজার, সরকারি দপ্তর ইত্যাদি খোলার পরামর্শ দিয়েছেন জার্মানির একদল বিশেষজ্ঞ। এ ব্যাপারে বুধবার জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা ম্যার্কেল মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

করোনা সংকটের জের ধরে বিভিন্ন দেশে লকডাউন বা কড়া বিধিনিয়মের কারণে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে শিশু ও কিশোররা কিন্ডারগার্টেন বা স্কুলে যেতে পারছে না। ফলে শুধু পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে না, তারা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গ, একসঙ্গে খেলাধুলা ও অন্যান্য কার্যকলাপের অভাবও বোধ করছে।

কবে আবার স্কুল খুলবে, সে বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা না থাকায় ধৈর্য ধরে বসে থাকাও অনেকের জন্য কঠিন হয়ে উঠছে। এমন প্রেক্ষাপটে ‘লেওপল্ডিনা’ বা জার্মানির জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি ধীরে ধীরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলার পরামর্শ দিয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে কড়া স্বাস্থ্যবিধি আরোপ করে স্কুল খোলা যেতে পারে বলে অ্যাকাডেমির বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে সংক্রমণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখেই প্রশাসনকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

লকডাউন শিথিল করতে সার্বিক কিছু পরামর্শও দিয়েছে ‘লেওপল্ডিনা’৷ অ্যাকাডেমির বিজ্ঞানীদের মতে, গণপরিবহন নেটওয়ার্কে যাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা উচিত। এমনকি দোকানবাজার, রেস্তোরাঁ ও সরকারি দপ্তরও খোলা উচিত বলে তাঁরা মনে করেন।

তারপরের পর্যায়ে ভ্রমণ ও প্রকাশ্যে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। ফলে অর্থনীতির বর্তমান ক্ষয়ক্ষতি সামলানো অপেক্ষাকৃত সহজ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

জার্মান চ্যান্সেলর আঞ্জেলা ম্যার্কেল বিশেষজ্ঞদের এই মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। কড়া বিধিনিষেধ শিথিল করার বিষয়ে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে জার্মানির জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির প্রস্তাবকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবার ম্যার্কেল রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ১৯ এপ্রিলের পরের পরিস্থিতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে চান। নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আরমিন লাশেট গত সপ্তাহেই এ বিষয়ে এক নীতিমালা প্রস্তুত করেছেন।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গোটা দেশজুড়ে মোটামুটি একই রকম বিধিনিয়ম কার্যকর করার পর রাজ্যাগুলো এবার পরিস্থিতির ভিত্তিতে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবে কিনা, সে বিষয় ভাবনাচিন্তা চলছে। জীবনযাত্রা ধাপে ধাপে স্বাভাবিক করার এই পরামর্শকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন।

অন্যদিকে এর ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আরও ছড়ানোর আশঙ্কাও উড়িয়ে দিতে পারছে না মানুষ। সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-র উদ্যোগে ইউগভ এক জনমক সমীক্ষা চালিয়েছে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, যে প্রায় ৪৪ শতাংশ মানুষ বর্তমান কড়া বিধিনিয়ম ১৯ এপ্রিলের পরেও চালু রাখার পক্ষে।

এমনকি ১২ শতাংশ আরও কড়া নিয়মের পক্ষে সওয়াল করেছেন। মাত্র ৩২ শতাংশ নিয়ম শিথিল দেখতে চান এবং আট শতাংশ মানুষ সবরকম বিধিনিয়ম তুলে নেবার পক্ষে।

আপাতত সবার নজর অস্ট্রিয়া ও ডেনমার্কের দিকে৷ মঙ্গলবার থেকেই এই দুই দেশে ছোট দোকানগুলো খোলা হয়েছে। তবে সেই সঙ্গে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ডেনমার্কে বুধবার থেকে কিন্ডারগার্টেন ও স্কুলের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস আবার চালু হচ্ছে।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনা সংকটের জের ধরে পরিস্থিতির মধ্যে অনেক পার্থক্যের ফলে ইইউ কমিশন কোনো সাধারণ নীতি স্থির করতে পারছে না। তবে বিধিনিয়ম তুলে নেবার কিছু পূর্ব শর্ত পেশ করতে পারে ইইউ।


সর্বশেষ সংবাদ