মৃত্যুর আগ মুহুর্তেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়েছেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার, ভিডিও প্রকাশ

ড্রোন ফুটেজ
ড্রোন ফুটেজ  © ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেয়া

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রধান নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। এছাড়া ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ সিনওয়ারের অন্তিম মুহূর্তের ড্রোন ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায় এই নেতা মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়েছেন। এতে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মানসিক দৃড়তােই প্রকাশ পেয়েছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভিডিওতে দেখা যায়, নিহত হওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে সিনওয়ার ওই ড্রোনের দিকে একটি কাঠের টুকরো ছুড়ে মারছেন। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত হওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে আইডিএফ ড্রোনের দিকে লাঠি ছুড়তে দেখা যায় বলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে।

ফুটেজটিতে একটি কক্ষে সিনওয়ারকে বসে থাকতে দেখা যায়। সেই কক্ষের ভেতরে ভবনের ভেঙে পড়া বিভিন্ন সামগ্রী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। একপর্যায়ে মুখোশধারী সিনওয়ার আইডিএফ ড্রোনের দিকে একটি লাঠি ছুড়ে মারেন।

মূলত গত বুধবার গাজার রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হামাসের প্রধান নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হন। তবে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা জানত না তারা সিনওয়ারকে হত্যা করেছে। পরে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হয়ে ইসরায়েলি হামলায় হামাস প্রধানকে হত্যার দাবি করেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ।

আইডিএফ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিনওয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিবৃতি দেওয়ার সময় ফুটেজটি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সিনওয়ার এমন একটি এলাকায় লুকিয়ে ছিলেন যেটিকে আমাদের বাহিনী দীর্ঘ সময় ধরে ঘিরে রেখেছিল। আমরা জানতাম না যে তিনি সেখানে আছেন, কিন্তু আমরা দৃঢ় সংকল্পের সাথে আমাদের কাজ চালিয়ে গিয়েছি।’

প্রসঙ্গত, ইয়াহিয়া সিনওয়ার ১৯৬২ সালে গাজার খান ইউনিস শরণার্থী ক্যাম্পে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবারের আদি বাসস্থান ছিল মাজদাল আসকালানে। পরবর্তীতে দখলদার ইসরায়েল যার নাম দেয় আসকেলন। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের ভোটাভুটির মাধ্যমে ইসরায়েলের সৃষ্টি হওয়ার পর সিনওয়ারের পরিবারকে মাজদাল আসকালান ছেড়ে গাজার খান ইউনিসে চলে যেতে হয়। সেখানে শরণার্থী হিসেবে জীবন শুরু করেন তারা।

সিনওয়ার তার জীবনের ২২ বছর দখলদার ইসরায়েলের কারাগারে ছিলেন। ২০১৭ সালে হামাসের গাজা শাখার প্রধান হন তিনি। এরপর চলতি বছরের জুলাইয়ে ইসমাইল হানিয়া যখন গুপ্তহত্যার শিকার হন তখন তিনি হামাসের প্রধান নেতার দায়িত্ব পান। দখলদার ইসরায়েলে গত বছরের ৭ অক্টোবর যে হামলা চালানো হয় সেটির ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে অভিহিত করা হয় সিনওয়ারকে।


সর্বশেষ সংবাদ