লন্ডনের স্কুলে নামাজে নিষেধাজ্ঞা— চ্যালেঞ্জে হেরে গেলেন মুসলিম ছাত্রী

মিখায়েলা কমিউনিটি স্কুল
মিখায়েলা কমিউনিটি স্কুল  © সংগৃহীত

গত বছর যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত মিখায়েলা কমিউনিটি স্কুলে নামাজসহ সব ধর্মীয় উপাসনা নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার জের ধরে গত মাসে ওই স্কুল ত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন দুই মুসলিম ছাত্রী। তারও আগে স্কুলের ভেতর নামাজের ওই নিষেধাজ্ঞাকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন আরেক ছাত্রী। মঙ্গলবার বিবিসি জানিয়েছে, আদালতের ওই চ্যালেঞ্জে শেষ পর্যন্ত হেরে গেছেন মুসলিম ওই শিক্ষার্থী।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক পর্যায়ের ওই স্কুলটিতে নামাজের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে ‘বৈষম্যমূলক’ দাবি করে হাইকোর্টে যুক্তি তুলে ধরেছিলেন চ্যালেঞ্জকারী শিক্ষার্থী। এর আগে স্কুল কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টকে জানিয়েছিল—ধর্মীয় প্রার্থনার অনুমতি দিলে ধর্ম নিরপেক্ষ একটি স্কুলের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

শেষ পর্যন্ত স্কুলের ভেতর নামাজে নিষেধাজ্ঞার পক্ষেই রায় দিয়েছে আদালত। মিখায়েলা স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক ক্যাথরিন বিরবলসিং বলেছেন, ‘এই রায় সব স্কুলের জন্য বিজয়।’

মুসলিম শিক্ষার্থীর চ্যালেঞ্জ খারিজ করে দেওয়া ৮৩ পৃষ্ঠার এক রায়ে বিচারক লিন্ডেন জানান—চ্যালেঞ্জকারী খুব দুর্বলভাবে হলেও স্বীকার করেছেন, ধর্ম প্রকাশ করার ক্ষমতার ওপর বিধিনিষেধের শর্ত মেনেই তিনি স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডনের ব্রেন্টে অবস্থিত মিখায়েলা কমিউনিটি স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭০০। শিক্ষার্থীদের অর্ধেকই আবার মুসলিম। গত বছর স্কুলটিতে ধর্মীয় উপাসনা নিষিদ্ধ করা হয়। তবে স্কুলের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করলে আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।

এদিকে আদালতের রায় ঘোষণার অপেক্ষা না করেই গত মাসে স্কুলটি ছেড়ে যান সারাহ ও সেলিনা নামে দুই মুসলিম শিক্ষার্থী। সে সময় তারা জানিয়েছিলেন— ইসলাম ধর্মে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। তারা লাঞ্চ ব্রেকের সময় ৫ মিনিট সময় নিয়ে যোহরের নামাজ আদায় করতে চেয়েছিলেন।

প্রধান শিক্ষক ক্যাথরিন বিরবলসিং সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের স্কুলকে হাসিখুশি, পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ একটি ধর্মনিরপেক্ষ স্কুল হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। যেখানে সব বর্ণ, বিশ্বাস ও অন্যান্য গ্রুপ সামগ্রিক কল্যাণের জন্য আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত।

নিজের দাদি মুসলিম ছিলেন দাবি করে ক্যাথরিন জানান, ইতিবাচক অভিজ্ঞতার ফলেই তার স্কুলে মুসলিম শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে। স্কুলে উপাসনা নিষিদ্ধ করার সঙ্গে ইসলাম ধর্মকে অপছন্দ করার কোনো সম্পর্ক নেই। কেবল স্কুলের নীতিমালা অনুযায়ী স্কুল পরিচালনা করতে গিয়েই ধর্মীয় উপাসনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ