রাশিয়ায় প্রথমবারের মতো ইসলামি ব্যাংকিং সেবা চালু
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৫৫ PM , আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩৩ PM
বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের মধ্যে রাশিয়া অন্যতম। ইউক্রেন যুদ্ধে প্রচুর পরিমান অর্থ খরচ করছে দেশটি। পশ্চিমা বিশ্বকে বৃদ্ধ আঙুল দেখিয়ে নিজের অবস্থানের জানান দিচ্ছেন পুতিন। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞায় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে রাশিয়া এখন মধ্যপ্রচ্যের দেশগুলোর সাঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে। সে বিষয়টি বিবেচনা করে প্রথমবারের মতো ইসলামি ব্যাংকিং সেবা চালু করেছে দেশটি।
দুই বছরের পাইলট প্রোগ্রামের অধীনে আজ শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে ইসলামি ব্যাংকিং সেবা চালু করা হয়েছে। রাশিয়াতে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মুসলিম রয়েছে। যদিও তারা এতদিন ইসলামিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু এ ব্যবস্থাপনার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছিল না। শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রথম ইসলামি ব্যাংক ব্যবস্থা চালু করল দেশটি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রমের সম্ভাব্যতা মূল্যায়নের জন্য একটি আইনে স্বাক্ষর করেন। পাইলট প্রোগ্রামের অধীনে চারটি মুসলিম অধ্যুষিত প্রজাতন্ত্রে কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর মধ্যে রয়েছে- তাতারস্তান, বাশকোর্তোস্তান, চেচনিয়া এবং দাগেস্তান। এসব অঞ্চলে আগে থেকেই ইসলামিক অর্থায়নের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
দেশটির অর্থনীতিবিদরা বলছেন যদি রাশিয়া এই প্রোগ্রামে সফল হতে পারে তাহলে দেশটির বাকী অংশে এ বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রাশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব এক্সপার্ট ইন ইসলামি ফিন্যান্সের নির্বাহী সেক্রেটারি মদিনা কলিমুল্লাহ আল জাজিরাকে বলেন, একজন গ্রাহক আর্থিক সমস্যায় থাকলে তার দ্বারা প্রচলিত ব্যাংক কোনোভাবেই লাভ করতে পারে না।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গ্রাহকের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক তৈরি করা হয়। যা প্রচলিত ব্যাংকিং কার্যক্রমে করা হয় না। এছাড়া ইসলামি ব্যাংক সমাজের জন্য ক্ষতিকর কোনো খাতে অর্থ বিনিয়োগ করে না। যেমন- মদ, তামাক এবং জুয়া।
রাশিয়া কেন ইসলামিক ব্যাংকিং সেবা চালু করা প্রশ্নে দেশটি সবচেয়ে বড় ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান এসবার ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ওলেগ গণেভের জানান, ইসলামি ব্যাংকিং সেক্টরের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৪০ শতাংশ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এটি ৭.৭ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাশিয়া কী পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইসলামিক ব্যাংকিং চালু করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভিজিটর দিয়ানা গালিভা বলেন, নতুন করে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশটির পশ্চিমা বিশ্বের চাপের মুখে পড়ে। ফলে এ চাপ এড়াতে দেশটি এখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে। এজন্যই তারা ইসলামিক অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে।