লকডাউনে মদ-পার্টি, এমপি পদও যাচ্ছে বরিস জনসনের

সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন  © সংগৃহীত

এবার এমপির পদও ছেড়েছেন বরিস জনসন। করোনা লকডাউনের সময় বিধি ভঙ্গ করে মদ-পার্টি আয়োজনের ঘটনায় বিতর্ক সৃষ্টি হয় যুক্তরাজ্য জুড়ে। বলা হচ্ছে সে ঘটনার জেরে প্রধানমন্ত্রীর পর এমপি পদও ছাড়তে হচ্ছে তাকে। বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী। এতে আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আবারও স্পষ্ট হলো।
 
করোনা মহামারির সময় ‍২০২০ সালে যুক্তরাজ্যজুড়ে লকডাউন ছিল।তখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট, বার প্রভৃতি বন্ধ রাখাসহ সামাজিক মেলামেশায় কঠোরভাবে নিষেধ ছিল। বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছিল সরকারি আদেশে।

কিন্তু ২০২১ সালের শেষের দিকে তার বিরূদ্ধে অভিযোগ ওঠে। সে সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে একাধিকবার নিজের বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে মদ-পার্টি উপভোগ করেন বরিস। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলায় তা পরিচিতি পায় ‘পার্টি গেট কেলেঙ্কারি’নামে । সে কেলেঙ্কারির জেরে ২০২২ সালের ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বরিস জনসন।

যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে তিনিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় বিধি লঙ্ঘণের অভিযোগ উঠেছে। এবং রাষ্ট্রীয় বিধি লঙ্ঘণের অভিযোগে  ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে। ব্রিটেনে কোনো এমপির বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের গুরুতর অভিযোগ উঠলে পার্লামেন্ট সে এমপিকে অস্থায়ী বা স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে পারে। আর কোনো এমপিকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলে ওই এমপি আর কখনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না।

বিবৃতিতে ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি পদত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছি মুষ্টিমেয় কিছু লোকের কারণে । যেসব অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে— সেগুলোর পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই তাদের কাছে। তবে বিবৃতিতে জনসন অভিযোগ করেছেন, তার বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট তদন্তের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি ‘রাজনৈতিক’। পার্লামেন্টের আইনপ্রণেতারা তদন্তের নামে একটি ‘ক্যাঙ্গারু আদালত’ গঠন করেছে বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে এ অভিযোগ।
 
গত মে মাসে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে  আসা নতুন অভিযোগ অনুযায়ী, কেবল ডাউনিং স্ট্রিটেই নয় চেকারেও মহামারির সময় ‘পার্টি’ করেছেন জনসন ও তার বন্ধুরা। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রধানমন্ত্রীর যেসব বাসভবন আছে, যেগুলো সরকারিভাবে ‘চেকার’ নামে পরিচিত। 

ব্রিটেনের পার্লামেন্ট হাউস অব কমন্সে এ সংক্রান্ত অভিযোগ আসার পর তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করে পার্লামেন্ট । তাকে গোপন (কনফিডেনশিয়াল) চিঠিও দিয়েছে পার্লামেন্ট। চিঠির লেখা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, পার্লামেন্ট কমিটি জনসনকে যে 
দেয়া চিঠিতে  সতকর্ববার্তা ছিল। এ কারণে আগেই বাধ্য হয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

সূত্র : রয়টার্স


সর্বশেষ সংবাদ