পুলিশ কি সত্যিই ছাত্রলীগকে মেরেছে?

পুলিশ কি সত্যিই ছাত্রলীগকে মেরেছে?
পুলিশ কি সত্যিই ছাত্রলীগকে মেরেছে?  © সংগৃহীত

ফেসবুকে কিছু বর্তমান ও সাবেক ছাত্রলীগ কর্মিদের কান্নাকাটি ও ক্ষোভ দেখছি এবং ‘যথারীতি যত দোষ নন্দঘোষ’-এর মতো পুলিশকে দায়ি করছে। কিন্তু এই পরিস্থিতি কেন, কে বা কারা তৈরি করেছে, তার কোন ব্যাখ্যা দেখছি না।

গত ১৫ দিন ধরে বরগুনায় পুলিশের একটাই কাজ ছিল। তা হলো নতুন কমিটির ছাত্রলীগ নেতাদের ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভুর ছত্রছায়ায় থাকা পদ বঞ্চিত নেতাদের হাত থেকে রক্ষা করা। এমপি সাহেবের আশ্রয় প্রশ্রয়ে থাকা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত অংশ যারা পদ পেয়েছেন তাদের চেয়ে মারামারি করার ক্ষেত্রে বেশি শক্তিশালী।

কেন্দ্র থেকে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর থেকে এমপি সাহেবের গ্রুপের ছেলেরা দল বেধে মহড়া দিচ্ছিল। আর গত ১৫ দিন ধরে পুলিশ দুই পক্ষের মাঝে দাড়িয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছিল।

পুলিশের গোয়েন্দা তথ্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মডেলের মতো বরগুনায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে এমপি সাহেবের গ্রুপ কেন্দ্রে একটি বার্তা দিতে চাচ্ছিলেন যে তাদের ছাড়া বরগুনা অচল। কিন্তু পুলিশের কারনে তা হতে পারছিল না।

শোক দিবসের সকালে প্রশাসন, এমপি, রাজনৈতিক দলের সবাই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেবার পর সবাই আলোচনায় অনুষ্ঠান শিল্পকলা একাডেমিতে চলে আসলেন। কিন্তু এমপি সাহেবের ছাত্রলীগের গ্রুপটি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে বসে থাকলেন, তারা কিছুতেই ছাত্রলীগের নতুন কমিটিকে সেখানে আসতে দেবেন না।

পুলিশের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করা ছিল, ছাত্রলীগের নতুন কমিটি এমপি সাহেব ও তার গ্রুপ চলে যাবার পর ফুল দিতে আসবে। নতুন কমিটি সেটা মেনেও নিয়েছিল।

পুলিশ পরিস্থিতি বুঝতে পেরে আবারো এমপি সাহেবের দারস্থ হলো, তাদের অনুরোধ তার ছেলেরা যেন চলে আসে। কিন্তু এমপি কর্ণপাত করেছেন না। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনেক অনুরোধের পর এমপি সাহেবের নির্দেশে তার গ্রুপের ছেলেরা মিছিল নিয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে আসলেন। পুলিশ হাফ ছেড়ে বাঁচল।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ পেটানো পুলিশের বাড়াবাড়ি, বিরোধীদের মারলে পেশাদারি

কিন্তু নতুন কমিটির ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শোক মিছিল নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি পার হবার সময়ই এমপি সাহেবের ছেলেরা তাদের ওপর হামলা শুরু করে। পুলিশ নতুন কমিটির সবাইকে সরে যেতে বললে তারা সরে যায়। কিন্তু শিল্পকলার ছাদ থেকে ইট আসতে থাকে পুলিশের দিকে। পরিস্থিতি কিছুটা শান্তও হয়ে যায়।

এই যে পুলিশের কারণে পদবঞ্চিতরা তাদের শক্তি প্রদর্শণ করতে পারছে না, এজন্য সব ক্ষোভ গিয়ে পড়ে পুলিশের ওপর। যদি তাই না হয় তাহলে সব কিছু থেমে যাবার পর হঠাৎ করে পাশাপাশি থাকা ডিসি, এমপির গাড়িতে না পরে একেবারে অ্যাডিশনাল এসপির গাড়িতেই কেন ইট পড়বে?

এরপর যা হয়েছে সবাই দেখেছেন, পুলিশের নির্দয় লাঠিপেটা। এখন প্রশ্ন হলো পুলিশ কি ছাত্রলীগকে পিটিয়েছে নাকি ১৫ আগস্টের মতো একটি শোকাবহ দিনে যারা এধরনের নৈরাজ্য তৈরি করেছে তাদের পিটিয়েছে। এমন একটি দিনে যারা এধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে তারা কিভাবে ছাত্রলীগ হয় বলেন তো?

হ্যাঁ, পুলিশ তার ধৈর্য্যের পরীক্ষায় পুরোপরি পাশ করতে পারেনি এটাই হলো তাদের দোষ। কিন্তু পুলিশ মার খাবার পরও মানবিক আচরণ করবে এমন মানবিক পুলিশ আপনারা যারা মায়াকান্না করছেন তারা কবে চেয়েছিলেন বলতে পারেন? অন্য রাজনৈতিক দলকে পেটালে তো পুলিশকে পুরস্কৃত করেছেন। তাদের মুখে এমন কথা কতটুকু মানায়?

আমি তো মনে করি এই ঘটনার মূল কারিগর ধীরেন্দ্র নাথ বাবু। তিনি এটাই চেয়েছিলেন। ধীরেন্দ্র নাথ বাবু  শিল্পকলার ভেতর থেকে যারা ইট মারছিল তাদের নেতা সবুজ মোল্লাকে তার গাড়িতে উঠিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এতে কি বোঝা যায়? যারা স্রোতে গা ভাসিয়ে শুধু পুলিশকে ধুয়ে দিচ্ছেন তাদের উচিত একটু গভীরে যাওয়া। [ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence