৮০ হাজার শূন্যপদের তালিকা এনটিআরসিএতে, গণবিজ্ঞপ্তির খবর নেই

এনটিআরসিএ
এনটিআরসিএ  © ফাইল ফটো

সারা দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষক শূন্যপদের তালিকা রয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কাছে। তবে এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের চাহিদা থাকলেও শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারছে না এনটিআরসিএ।

এনটিআরসিএ সূত্রে গেছে, এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ৫৭ হাজার ৩৬০টি শূন্যপদের তালিকা আগে থেকেই এনটিআরসিএর কাছে ছিল। চলতি বছরের ২৬ আগস্ট দেশের সব জেলার শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে এনটিআরসিএর বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আকরাম হোসেন বৈঠক করেন। সভায় ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনের জন্য ফের শূন্যপদের তালিকা চাওয়া হয়। এতে নতুন করে আরও প্রায় ২২ হাজার শূন্যপদের তথ্য এনটিআরসিএতে জমা হয়। সব মিলে দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।

তথ্যমতে, এই ৮০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি দুই ধাপে প্রকাশ করতে চায় এনটিআরসিএ। প্রথম ধাপে তৃতীয় চক্রে ৫৭ হাজার ৩৬০ জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে এনটিআরসিএ। এর পর ১৬তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে ২২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দিতে চায় কর্তৃপক্ষ। তবে তৃতীয় চক্রে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পূর্বে যদি ১৬তম নিবন্ধনধারীদের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হয়; সেক্ষেত্রে দুই নিয়োগ এক সাথেও হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

এ প্রসঙ্গে এনটিআরসিএর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমাদের কাছে সবমিলে প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষকের শূন্য পদের তথ্য রয়েছে। তবে নানা কারণে শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো ১৩তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের হাইকোর্টে রিট করা। যদিও আদালতের পর্যবেক্ষণ কপি আমাদের হাতে রয়েছে। তবুও এটি নিয়ে ফের আমাদের আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। আদালত থেকে আমাদের একটি সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দিলে আমরা গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কাজ শুরু করতে পারবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মো. আকরাম হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আদালত যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে সেখানে ১৩তম দের পক্ষে রায় দেয়া হয়েছে। আমরা যদি শুধু তাদের নিয়োগ দেই; তাহলে ১-১৫তম নিবন্ধধারী শিক্ষকদের অনেকেই বঞ্চিত হবেন। সেটি করা ঠিক হবে না। তাই আমরা আদালতে একটি আর্জি দিব। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এই আর্জি দাখিল করা হবে। আদালত আমাদের সুস্পষ্ট একটি গাইডলাইন দিলে তবেই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

সূত্র জানায়, আদালতের নির্দেশনায় ২০১৭ সালে মেধা তালিকা তৈরি করা হয়। নিবন্ধিত প্রার্থীদের ওই তালিকা মোতাবেক নিয়োগ দিতে নির্দেশনা দিয়ে এমপিও নীতিমালা-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশন ১৩তম নিবন্ধিত প্রার্থীদের সরাসরি নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন।

এতে সিদ্ধান্ত দুটি হওয়ায় শূন্য পদের তালিকা চূড়ান্ত হলেও শিক্ষক নিয়োগ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনটিআরসিএ। মূলত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কাজ এখানেই আটকে রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে আটকে রয়েছে অনেক নিবন্ধিত প্রার্থীর স্বপ্নও।

জানা গেছে, ১৫তম পর্যন্ত নিবন্ধিত মেধা তালিকায় ছয় লাখ ৩৪ হাজার জন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে এক লাখ ৮২১ জনের বয়স শেষ হওয়ায় তারা নিয়োগের সুযোগ পাবেন না। তবে ৩৫ বছরের মধ্যে আরও দুই লাখ ৮৮ হাজার প্রার্থী রয়েছেন। তাদের অনেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেয়েছেন। তবে প্রার্থীদের বড় অংশই নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন। মামলা জটিলতায়ও অনেকের বয়স পার হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ