১-১৫তমদের আবেদনের সুযোগ ও এনটিআরসিএ কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন কাল

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ  © ফাইল ফটো

আসন্ন ৫ম গণবিজ্ঞপ্তিতে ১-১৫তম নিবন্ধন সনদধারীদের আবেদনের সুযোগ ও বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবেন নিবন্ধনধারীরা। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) এনটিআরসিএর কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হবে।

রোববার 'আমার সনদ আমি লড়বো' সংগঠনের পক্ষে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১-১৫তম নিবন্ধন সনদধারীদের মধ্যে এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী যাদেএ কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা অনূর্ধ্ব ৩৫ বছর, তাদের গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ ও এনটিআরসিএর মুহাম্মদ নুরে আলম সিদ্দিকী ও মো: ওবায়দুর রহমানের পদত্যাগ দাবিতে আগামী ১৯ মার্চ প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন পালিত হবে৷ ইতোমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের অনুমতিও মিলেছে।

এতে জানানো হয়, গত ৪ মার্চ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ১-১৫ তমদের সনদ অকার্যকর ও আবেদনের অযোগ্য মর্মে প্রকাশিত সংবাদের আলোকে একটি সুষ্ঠু মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মানববন্ধনে এনটিআরসিএর বর্তমান চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহিল আজম সনদ বাতিলের খবরটি গুজব বলে বক্তব্য প্রদান করেন এবং ১-১৫ তমদের আবেদনের সুযোগ দানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। সম্প্রতি সদস্য (শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান) মুহম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী ও একজন নিবন্ধনধারীর একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই কল রেকর্ডের কারণে নিবন্ধনধারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিবন্ধনধারীরা নূরে আলম সিদ্দিকীর অপসারণ দাবি করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, নিবন্ধনধারীদের দাবি অনুযায়ী মুহাম্মদ নুরে আলম সিদ্দিকী ও তার সহযোগী মো. ওবায়দুর রহমান বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রতয়ন কর্তৃপক্ষ (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকুরী প্রবিধান মালা ২০০৯ লঙ্ঘন করেছেন। এই দুজন কর্মকর্তার বিচার দাবি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়,  শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। উক্ত অভিযোগের বিষয়ে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গণমাধ্যমে  নিবন্ধন সনদধারীদের রিট ব্যবসায়ী, নিয়োগ প্রত্যাশী সিন্ডিকেট,  নিয়োগ ব্যবসায়ী, নিষিদ্ধ জামাত শিবিরের এজেন্ট ঘোষণা দিয়ে সাইবার মামলার হুমকিসহ নানা রকম মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করে নিজেদের অসৎ কর্মকান্ডকে ধামাচাপা দেওয়ার অপকৌশল করেছে।

তারা জানান, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া বিভিন্ন রায়ের ভুল ব্যাখ্যা এবং সলিসিটরের মতামতের অপব্যাখ্যা দিয়ে মুহাম্মদ নুরে আলম সিদ্দিকী ও মো: ওবায়দুর রহমান ১-১৫ তমদের আবেদন সুযোগ বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রের খেলায় লিপ্ত হয়েছে। ৩৪৩/২০১৯ এবং ১৯৫/২০২০ সিভিল রিট পিটিশনগুলো ছিলো একক নিয়োগ দাবি সংক্রান্ত আবেদন। আর ১০ এর ১ উপধারা শুধুমাত্র ১৩, ১৪ এবং ১৫ তমদের জন্য। ৩৪৩/ ২০১৯ এর রায়ের কপিতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে (১-১২) তম ব্যাচের নিবন্ধন সনদধারীদের পরীক্ষা পদ্ধতি ও বিধিমালা ছিলো ভিন্ন সুতরাং ১৩তমদের মতো একক নিয়োগের সুবিধা তারা ভোগ করতে পারবে না। তাছাড়া ২০১৫ সালের নতুন নিয়ম ৩(ক) ঢুকানো হয়নি। এই রায়ের কপির সর্বশেষ লেখা আছে ৬০ দিনের মধ্যে পিটিশনারদের নিয়োগ সুপারিশ প্রদান করতে হবে। এই রায়ের কপিতে এনটিআরসিএ আইনজীবীসহ বাদী বিবাদী উভয় পক্ষে আইনজীবীর বক্তব্য গুলো স্পষ্ট আছে। আর এই সুযোগে এই দুই কর্মকর্তা তাদের নির্ধারিত আইনজীবীর বক্তব্যের বরাদ দিয়ে রায় তাদের পক্ষে চলে এসেছে মর্মে চালবাজি শুরু করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এনটিআরসিএ সনদের মেয়াদ সম্পর্কিত সুস্পষ্ট কোনো রায়ই পায়নি। সমস্ত রিট গুলোর বিচারকদের পর্যবেক্ষণ তাই নিরঙ্কুশ প্রমাণ করে। যখন এখানেও তাদের কৌশল ব্যর্থ হলো এনটিআরসিএ এর শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান শাখার কতিপয় কর্মকর্তা সুকৌশলে সলিসিটর এর মতামত আনতে উঠে পরে লাগলো, সেখানেও তারা হেরে গেলো, কারণ ৭১/২০২৩ সিভিল রিভিউ পিটিশন চলমান থাকায় ১-১২ তমদের বিষয়ে সনদের মেয়াদ সম্পর্কে কোনো মতামত প্রদান করেনি, এমনকি একক নিয়োগ সংক্রান্ত  সিভিল রিভিউ পিটিশন ৩৪৩/২০১৯ এবং ১৯৫/২০২০ এর আলোকে ১৩ ও ১৪ তমদের একক নিয়োগ সম্পর্কে মতামতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ সুপারিশের যোগ্য নয় মর্মে মতামত প্রদান করেন। এই দুই কর্মকর্তা তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় সনদের মেয়াদ তিন বছর এবং রায়ে তাদের বিজয় হয়েছে বলে সকলের ধারণাকে পাল্টে নিজের মতো ব্যবহার করা শুরু করলেন।

৭১/২০২৩ সিভিল রিভিউ পিটিশনের সনদের মেয়াদ তিন বছর করা সংক্রান্ত এনটিআরসিএর আবেদনের প্রেক্ষিতে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে  আইনের দোহাই দিয়ে ১-১২ তমদের বেআইনি ভাবে বঞ্চিত করার ঘোষণা করে আসছে। অথচ পিটিশনটির এখন অবধি কোনো শুনানিই হয়নি। রায় তো পরের বিষয়। রায় যদি তাদের পক্ষেও চলে আসে রায়ের কপি বের হওয়ার পর মন্তব্য করতে পারবে। অথচ পিটিশনটি নিষ্পত্তি হওয়ার পুর্বেই কর্মকর্তাদের এ জাতীয় মন্তব্য আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা দেখানোর শামিল।এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী ১-১৫ তমদের আবেদন সুযোগ দেওয়া না হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ