সাত কলেজ অধ্যক্ষদের ‘অসম্মান’ হলে কঠোর কর্মসূচি

ঢাবি সাত কলেজ অধ্যক্ষদের ‘অসম্মান’ করলে কঠোর কর্মসূচি
লোগো

তিন বিষয় পর্যন্ত অকৃতকার্য ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পরের শিক্ষাবর্ষে প্রমোশনের দাবি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ না মানলে সাত কলেজ অধ্যক্ষদের ‘অসম্মান’ করা হবে বলে উল্লেখ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, সাত কলেজ অধ্যক্ষদের সঙ্গে পরামর্শ করেই অধ্যাপক সেলিম উল্লাহ খোন্দকার তাদের দাবির বিষয়ে ৪৮ ঘন্টার সময় নিয়েছেন।

আজ সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে আন্দোলনকারী কবি নজরুল সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী আতিক হাসান শুভ বলেন, সাত কলেজ অধ্যক্ষদের সমন্বয়ে নেয়া সিদ্ধান্ত ঢাবি কর্তৃপক্ষ না মানলে সেটি আমাদের অধ্যক্ষদের অবমাননা হবে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যদি আমাদের অধ্যক্ষদের ‘অসম্মান’ করে তাহলে তালিকা করে আমাদের সব সমস্যা নিয়ে ৪৮ ঘন্টা পর কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

তিনি বলেন, গতকাল রবিবার রাতে আমরা অধ্যক্ষদের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেছি। তার মানে এই নয় আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে। কাল সারাদিন অবস্থানের পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের সঙ্গে কোন যোগাযোগ করা হয়নি। উল্টো রাতে ঢাবি কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমে আমাদের বিপক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন। এর মাধ্যমে মনে হচ্ছে, তারা আমাদের শিক্ষার্থীদের অনুভূতি নিয়ে খেলা করছেন।

রবিবার সকাল থেকে সাত কলেজে শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেন। পরে
কলেজ অধ্যেক্ষের আশ্বাসে তারা কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন

এর আগে গতকাল সকাল ১১টা থেকে কবি নজরুল সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের অবরোধ করে অণশন করেছেন অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে সাত কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে তাদেকে আন্দোলনস্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ক্যাম্পাসে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন কলেজ অধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেকে। পরে কবি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষের আশ্বাসে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা তাদের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করে।

এ বিষয়ে সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকারে বলেছেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে ‍বুঝতে পেরিছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আগামী দুই দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উপযুক্ত সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলা সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অন্তত
চার জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলা সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অন্তত ৪ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা হলেন- সরকারি তিতুমীর কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান, কবি নজরুল সরকারি কলেজের ব্যবসা বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান, বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থী নিগাত ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী আফরিন সুলতানা। তাদের সবাইকে আন্দোলনস্থলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এদিকে তাদের দাবির বিষয়ে রবিবার রাত ১০টার দিকে সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. এ এস এস মাকসুদ কামাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছেন, তিন বিষয় পর্যন্ত অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পরের শিক্ষাবর্ষে প্রমোশনের সুযোগ নেই। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় আগেই দুই বিষয় পর্যন্ত প্রমোশনের সিদ্ধান্ত রাখা হয়েছে। নতুন করে তিন বিষয়ে পর্যন্ত প্রমোশন দেয়ার কোন সুযোগ নেই।

তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা আপাতত ঢাবি কর্তৃপক্ষের এমন বক্তব্যে কোন প্রতিক্রিয়া দেখাতে চান না। তারা সাত কলেজ অধ্যক্ষদের ৪৮ ঘন্টার আশ্বাস বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছেন।

আন্দোলনের মুখপাত্র ও কবি নজরুল কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তাকিবুর রহমান বাপ্পি বলেন, আমরা আমাদের অধ্যক্ষদের আশ্বাস বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছি। এর বাইরে কোন কথায় আমরা আপাতত কান দিতে চাই না। কবি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ স্যার আজকেই ঢাবিতে আমাদের দাবির বিষয়ে জাবাবেন বলে জানিয়েছেন।