সড়কের পাশে ধানের হাট, যানজটে ভোগান্তি
- ২২ জুন ২০২৫, ১৫:১০
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পৌর শহর ও ধারা বাজারে আঞ্চলিক সড়কের পাশে অপরিকল্পিত ধানের হাট বসার কারণে যানজটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যানবাহনের যাত্রীসহ চালক ও সাধারণ মানুষের। এ সমস্যার সমাধানের দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন।
জানা যায়, প্রতি শুক্রবার ও সোমবার ধারা বাজারে সাপ্তাহিক হাট বসে। ধারা ইউনিয়ন ছাড়াও আশপাশের ধুরাইল, নড়াইল, আমতৈল, কৈচাপুর ও স্বদেশী ইউনিয়নের হাজারো কৃষক ব্যাটারিচালিত অটোবাইক, অটোরিকশা, হ্যালোবাইক, ট্রলি ও মিনি ট্রাক দিয়ে ধারা বাজারে ধান বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। সড়কের পাশে জায়গা না থাকায় ধানভর্তি এসব যানবাহন রাস্তার ওপর রেখেই ধান ক্রয়-বিক্রয় করেন কৃষক ও ধান ব্যবসায়ীরা। এ কার্যক্রম চলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এরপর শুরু হয় আরেক ভোগান্তি। রাস্তার ওপর বড় বড় ট্রাক রেখে সেই ধানগুলো বোঝাই করার সময় আবারও সৃষ্টি হয় যানজট। এভাবে চলতে থাকে গভীর রাত পর্যন্ত।
বর্তমানে বোরো মৌসুম হওয়াতে হাটের দিন ছাড়াও প্রতিদিন ধান ক্রয় বিক্রয় হয় এ বাজারে। এ ছাড়া প্রতি সোমবার আঞ্চলিক সড়কের পাশেই বসে গরু ছাগলের হাট। বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট-বড় যানবাহনে করে কৃষক ও পাইকাররা এ বাজারে গরু নিয়ে আসেন। কিন্তু গাড়ি থেকে গরুগুলো নামিয়ে সেই গাড়িগুলো অপরিকল্পিতভাবে রাখে রাস্তার ওপর। এসব কারণে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় রাস্তা দিয়ে চলাচল করা মানুষদের।
আরও পড়ুন: ঢাবির কোটা ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে ফের ‘ট্রান্সজেন্ডার’, সমালোচনায় বাতিল হচ্ছে
ধান বিক্রি করতে আসা আবদুল সালমা ফকির বলেন, ‘রাস্তার ওপর ধান মহলটি করার কারণে আমরা নিজেরাও সমস্যার মধ্যে পড়ছি। রাস্তার ওপর গাড়ি রেখে বিভিন্ন পাইকারদের দোকানে ধানের নমুনা নিয়ে ভালো দামের আশায় ঘুরতে হয়। তাই সময় লাগে। কিন্তু এতে করে তো পথচারীদের ভোগান্তি হচ্ছে। যদি ধান মহলটি ধারা বাজারের বাইপাস এলাকায় স্থানান্তর করা যায় তাহলে এই সমস্যার সমাধান হবে। আমরাও সুন্দরভাবে ধান বিক্রি করতে পারব।’
অন্যদিকে একই অবস্থা হালুয়াঘাট পৌর শহরেও। প্রতি বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক হাট বসলেও পৌর শহরের উত্তর বাজারে (হালুয়াঘাট-ময়মনসিংহ) আঞ্চলিক সড়কের পাশে অবস্থিত ধান মহলটিতে প্রতিদিনই আশপাশের কয়েক ইউনিয়ন থেকে কৃষকরা ধান বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। হালুয়াঘাটের কড়ইতলী ও গোবরাকুড়া স্থলবন্দর, গাবরাখালী পর্যটনকেন্দ্র ও সীমান্ত সড়ক দিয়ে নালিতাবাড়ীর বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে এ সড়ক পথ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। রাস্তার পাশে ধানমহল থাকায় এখানেও যানজটে আটকে থাকতে হয় গাড়িতে চলাচলকরা যাত্রী ও সাধারণ মানুষের। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও মুমূর্ষু রোগী নিয়েও অ্যাম্বুলেন্সকে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
আরও পড়ুন: ১৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ইউজিসি
তবে ভোক্তভোগীরা জানান, যানজট নিরসনে আনসার, গ্রাম পুলিশ কিংবা পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া দরকার ছিল। এত অসুবিধার পরও এখনো রাস্তার ওপর ধানের হাট বসানোয় প্রশাসনের গাফিলতিকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীনূর খান বলেন, ‘পরিকল্পিত ধান মহল করার বিষয়ে আমরা ধান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিগগিরই আলেচনায় বসব। আমরা ইতিমধ্যেই অবৈধ দোকানপাটগুলোতে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। পাশাপাশি যানজট নিরসনে আনসার সদস্যরা কাজ করছেন।’