‘কিল-ঘুষি-লাথির পর হকিস্টিক দিয়ে মারতে থাকে’, সেই অধ্যক্ষের ফোনালাপ ফাঁস

অধ্যক্ষ
অধ্যক্ষ   © সংগৃহীত

রাজশাহীতে রাজাবাড়ী কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজার একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। ‘সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী অধ্যক্ষকে মারপিট করেননি’ সংবাদ সম্মেলনের দু’দিন পর অধ্যক্ষ সেলিম রেজার ফোনালাপ ফাঁস হলো।

ফোনালাপে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তিকে গত ৭ জুলাই রাতে কী ঘটেছিল তার বর্ণনা দিতে শোনা যায়। তবে এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ সেলিম রেজার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করেন। সেই সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ সেলিমও মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া ৯ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের কল রেকর্ডের কথোপকথন পাঠকদের জন্য নিচে হুবহু তুলে ধরা হল- 

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি: এমপি কেন ডাকলো?

অধ্যক্ষ: এমপি ডাকেনি তো, ডেকেছে হচ্ছে সেকেন্ড এমপি রাজু। রাজু ডাকছে সকাল আটটার সময়, প্রিন্সিপাল মহোদয়দের এমপি সালাম দিয়েছে। সব প্রিন্সিপালরা রাত ১০টার সময় আসবে আপনি আসেন।
অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি: আচ্ছা।

অধ্যক্ষ: সব প্রিন্সিপালকে এই কথা বলছে, অনেক প্রিন্সিপালরা বলছে কী ব্যাপার, বলছে আসেন বুঝতে পারবেন। সকল প্রিন্সিপালকে ডেকেছে রাজু।

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি: পালপুরের প্রিন্সিপাল কী গিয়েছিল?

অধ্যক্ষ: না না। পালপুরের প্রিন্সিপাল যায়নি, ওই যে গালাগালি করার পর থেকে ও আর যায় না। করোনার আগে নিয়োগ নিয়ে গালাগালি করেছিল এবং আমাদের পিকনিকে সবার সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তারপর থেকে আসে না।

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি: আপনাদের অ্যাসোসিয়েশনে থেকে লাভ কী?

অধ্যক্ষ: কিচ্ছু নাই; কিচ্ছু নাই, অধ্যক্ষ ফোরাম অ্যাসোসিয়েশন আমার প্রয়োজন নাই। আমার ১২ জন অধ্যক্ষ যদি এক জায়গায় হয় আপনি এটা অন্যায় বললেন, অন্যায় করলেন, কেউ লড়তে পারব?

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি: তারপরে ডাকলো আপনি গেলেন?

অধ্যক্ষ: হ্যাঁ, গেলাম। আমি তো এমনি যাই না। যখন ডাকে মিটিংয়ে ডাকে তখনই যাই। অন্যান্য অধ্যক্ষরা সপ্তাহের মধ্যে তিন দিনই দেখা করে।

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি: আচ্ছা।

অধ্যক্ষ: আমি আর ২৪ নগরের অধ্যক্ষ হাবিব ভাই, কোনো মিটিং না হলে আমরা যাই না।

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি: আচ্ছা।

অধ্যক্ষ: এটা তার রাগ। আর আমি যখন যাই তখন হাবিব ভাই ডেকে নেয়। বৃহস্পতিবার সেই দিন হাবিব ভাই ও আমি এক সাথে গিয়েছি। হাবিবকে তো চেনেন?

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি: হ্যাঁ চিনি।

অধ্যক্ষ: এই দুটা লোক ছাড়া সবাই ওর পা চাটা।

অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি: ওখানে যাওয়ার পরে?

অধ্যক্ষ: ওখানে যাওয়া পরে শিরোইলের মজিবর ছিল। শিরোইল স্কুল এমপিওভুক্ত হওয়ার কারণে ফুল নিয়ে গিয়েছিল। আমাদের লিডার ছিল, সাধারণ সম্পাদক রশিদ ভাই ছিল। তারপর ওরা বাহিরে আসলো। ওমর প্লাজার পূর্ব পাশে তখন রাজু আসলো, বলছে, এমপি স্যার উঠে যাবেন ঢুকেন ঢুকেন। ঢোকার পর বসতেই বলে, সেলিম তোমার কলেজে কী হয়েছে। আমি বলি, স্যার কিছু হয়নি। (অপ্রকাশ যোগ্য ভাষা) তোর অফিসে বসে আমার নামে, আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলে। তুই আমাকে না বলে… ওই শিক্ষকদের বিচার না করে কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে, এরপর হকিস্টিক দিয়ে মারধর করতে থাকে।


সর্বশেষ সংবাদ