স্বাভাবিক হচ্ছে নিউমার্কেট, ক্রেতার উপস্থিতি কম
- ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২২, ০৪:৩৫ PM , আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২, ০৪:৩৫ PM
টানা ৪৮ ঘণ্টার অচলাবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে নিউমার্কেট। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সকাল থেকে নিউ মার্কেট ও তার আশপাশের এলাকার সব দোকানপাট খোলা হলেও ক্রেতার উপস্থিতি একেবারেই কম দেখা গেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় অন্যান্য সময়ে ঈদের আগ মুহূর্তে যে পরিমাণ মানুষের উপস্থিতি থাকত তার তুলনায় অনেকটাই ফাঁকা অবস্থা মার্কেট ও বিপণী বিতান গুলোতে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি শেষে দোকান খুলতে পেরেছেন এতেই তারা সন্তুষ্ট। খুব দ্রুতই স্বাভাবিক সময়ে ফেরার প্রত্যাশা তাদের। তবে রোজার শুরু থেকে পহেলা বৈশাখ ও ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে যে জমজমাট বেচাকেনা শুরু হয়েছিল এমন পরিস্থিতি আবারো ফিরবে কিনা সেটি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ তাদের।
ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট এর কাপড় ব্যবসায়ী জমির উদ্দিন বলেন, গত দুই দিনে যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনো পুষিয়ে ওঠার মতো নয়। গত দুই বছর করোনার কারণে ঈদ ও পহেলা বৈশাখে আমরা ব্যবসা করতে পারিনি। এতে অনেকেই পুঁজি হারিয়েছেন। এবার রোজার শুরু থেকে ক্রেতার উপস্থিতি ভালো থাকায় আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম অন্তত ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। কিন্তু গত দুই দিনের যে পরিস্থিতি তাতে আবারো আগের মতোই ক্ষতির মধ্যে পড়তে হল।
আরও পড়ুন: এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-বোনাস ঈদের আগেই
হারুন খন্দকার নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা কখনো সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি চাইনি। আমরা পরিস্থিতির শিকার হয়েছি। প্রত্যাশা করছি খুব দ্রুতই আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
অপরদিকে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে ঢাকা কলেজ প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে কোর কমিটি গঠনের কথা জানালেন নিু মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন। তিনি বলেন, যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল উভয়পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। এতে আমরা সন্তুষ্ট। এখন পরিস্থিতি খুবই স্বাভাবিক। আশা করি সামনে ক্রেতার পরিমাণ বাড়বে। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও অভিযোগ খতিয়ে দেখার ব্যাপারে আগের চেয়ে আরো সতর্কতা অবলম্বন করা হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এসময় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও।
মঙ্গলবার সকালে আবারও সংঘর্ষে জড়ান শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে তারা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। ছাত্রদের অনেকে হেলমেট পরে এবং লাঠি হাতে নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। ব্যবসায়ী-কর্মচারীরাও লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা চালানো শুরু করেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের উপর হামলা ঠেকাতে আইন করার দাবি
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে গোটা নিউ মার্কেট ও সায়েন্সল্যাব এলাকায়। থেমে থেমে সারাদিন চলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী এবং প্রায় অর্ধশত ব্যবসায়ী-কর্মচারী আহত হন।
সংঘর্ষের রেশ চলে বুধবার দিনভর। দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন ব্যবসায়ীরা। বিকেলে ব্যবসায়ীদের বক্তব্য প্রত্যাখান করে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামেন। এরপর রাতে তারা সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ ভূমিকায় সংশ্লিষ্ট ডিসি, এডিসি ও নিউ মার্কেট থানার ওসির প্রত্যাহারসহ ১০ দফা দাবি জানান।