রাজধানীতে ইফতার ঘিরে উৎসবের আমেজ
- হাসান তামিম
- প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২২, ১০:৫৯ PM , আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৪ AM
দীর্ঘ দুই বছর পর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় প্রাণ ফিরেছে রাজধানীর ইফতার বাজারগুলোতে। রোজার শুরু থেকেই বেশ জমজমাট বাহারি ইফতার আয়োজনে মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত রাজধানীর অলিগলি থেকে শুরু করে ছোট বড় রেস্টুরেন্ট ও অস্থায়ী ভ্রাম্যমান দোকানগুলো। এসব দোকানে মানুষের উপস্থিতিতে তৈরি হয়েছে অন্যরকম এক উৎসবের আমেজ।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট, আজিমপুর এলিফ্যান্ট রোড সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়ে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় ইফতার আয়োজনে ছোলা, বুট, মুড়ি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, শাহী হালিম, মাংসের চপ, কবুতর ও কোয়েল পাখির রোস্ট, গরু - মুরগির কাবাব, হালিম, সবজি পাকোড়া, রেশমি জিলাপি, বোম্বে জিলাপি, পরোটা, লুচি, চিকেন তান্দুরি, চিকেন ভুনা, কাচ্চি, তেহারি, দই চিড়া সহ অসংখ্য খাবারের পসরা।
বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করেই এসব পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বনিম্ন পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পনেরোশ টাকার ইফতার পণ্য রয়েছে এসব রেস্টুরেন্ট ও দোকানগুলোতে।
তবে ইফতার পণ্যের দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে এবং পরিমাণে কমেছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। ইফতার কিনতে আসা হাসিব বিল্লাহ নামের এক ক্রেতা বলেন, সচরাচর আগের তুলনায় সবকিছুর দাম বেড়েছে। একই সাথে পরিমাণ ও সাইজ ছোট হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকাটাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। একজন ব্যক্তি যদি ভালোভাবে ইফতার করতে চান তবে সর্বনিম্ন ৫০-৬০ টাকার নিচে সম্ভব হচ্ছে না।
বর্তমান পরিস্থিতিতে মেস বা হোস্টেলে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বল্পআয়ের মানুষজন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা বেশ বেকায়দায় রয়েছে জানিয়ে শাকিল আহমেদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ২০ তারিখ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় বাধ্য হয়েই ঢাকা থাকতে হচ্ছে। রোজায় সবকিছুর দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের তাদের জীবন ধারণ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে বিক্রেতারা বলছেন তারাও অনেকটা নিরুপায়। নিউমার্কেটের আল্লাহর দান রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার শাহীন হোসেন বলেন, প্রতিটি দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ইফতার পণ্য তৈরির প্রধান অনুষঙ্গ তেল-চিনি, আটা, ময়দার দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। যার প্রভাব পড়েছে ইফতার আয়োজনেও। পেঁয়াজু, বেগুনির আকার আগের থেকে ছোট করতে হয়েছে। আবার ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করে দামও বেশি করে নেওয়া যাচ্ছে না।
তাছাড়া ইফতারের আগে শরবতের বাজারেও বেশ চাঙ্গা। ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে বোতলে করে বিক্রি হচ্ছে আখের রসের শরবত, রুহ আফজার শরবত, তোকমা- ইসুপগুলের ভুসি মেশানো শরবত, পেস্তা বাদামের শরবত, বেলের শরবত, তরমুজের শরবত। আন্যান্য বিভিন্ন ফলের জুসের কদরও বেশ।
রাস্তার মোড়ে মোড়ে লেবু, ধনিয়া পাতা, বাঙ্গি, তরমুজ, কলা, খেজুর, কাঁচামরিচ, সরিষার তেল, বরফ, পেঁয়াজ, আনারস বিক্রি হতেও দেখা যায়।