কর্মস্থলে এক বছর ধরে গায়েব ‘বিসিএস ক্যাডার’ সেই কনস্টেবল

নায়েক আবদুল হাকিম
নায়েক আবদুল হাকিম   © সংগৃহীত

এক বছর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন ৪০তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে নিজের এএসপি হওয়ার ভুয়া খবর ছড়ানো সেই পুলিশ কনস্টেবল হাকিম উদ্দিন। এভাবে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তর তদন্ত করছে।

২০২১ সালের মার্চে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগ থেকে বদলি ছাড়পত্র নিয়েও ঢাকা রেঞ্জে যোগ দেনননি।

পুলিশ সদরদপ্তর থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালে কনস্টেবল হিসেবে যোগ দেয়ার পর ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি তিনি নায়েক পদে উন্নীত হন। নায়েক পদে পদোন্নতি হলেও কনস্টেবল হিসেবেই গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকশিত হয়।

৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ঘোষণার পর আলোচনায় আসেন হাকিম উদ্দিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়ান তিনি বিসিএস পুলিশে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। খবরটি ছড়িয়ে গেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুভেচ্ছাবার্তা আর অভিনন্দন জানাতে থাকেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সাধারণ মানুষও। পরে জানা গেছে, ৬৭তম হয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থী সঞ্জীব দেব।

আরও পড়ুন: কলকাতার বিপক্ষে ম্যাচসেরা ক্রিকেটার মোস্তাফিজ: আনন্দবাজার

হাকিম উদ্দিনের বিএসএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণের খবর নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ সদর দপ্তর। তবে কোন উদ্দেশ্যে তিনি এই তথ্যটি ছড়িয়েছেন তা তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানা গেছে, হাকিম উদ্দিনের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরায়। সায়েদাবাদ হাই স্কুল থেকে তিনি ২০১০ সালে মানবিক শাখায় এসএসসি পাশ করারর পর ২০১৩ সালে কনস্টেবল হিসেবে নিয়োগ পান।

২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর শিল্পাঞ্চল পুলিশে ছিল তার প্রথম কর্মস্থল। এরপর ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্স, পিওম (উত্তর বিভাগ), ডিএমপি প্রটেকশন ও সর্বশেষ ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি ডিভিশনে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে হাকিম উদ্দিনের বদলি হয় ঢাকা রেঞ্জে। কিন্তু ঢাকা রেঞ্জে তিনি যোগদান করেননি।

ঢাকা রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) জিহাদুল কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা রেঞ্জে তার পোস্টিং হয়েছিল, কিন্তু উনি জয়েন করেননি। আমাদের এখানে যেহেতু জয়েন করেননি তাহলে ডিএমপিতে থাকার কথা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যতদূর শুনেছি, তিনি আনঅথরাইজড অনুপস্থিত রয়েছেন। প্রায় এক বছর আগে পোস্টিং হলেও তিনি আমাদের এখানে আসেননি। এ জন্য সম্ভবত তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, হাকিম উদ্দিন ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগে ছিলেন। এরপর থেকে তিনি লাপাত্তা।

সার্বিক বিষয়ে কথা বলার জন্য হাকিম উদ্দিনের দুটি মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে একটি বন্ধ পাওয়া যায়। সচল নম্বরটিতে কল ও এসএমএস দিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ