নারীকে অসংখ্য ‘না’-এর মাঝে বেড়ে উঠতে হয়: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি  © ফাইল ফটো

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে এবং পুরো পৃথিবী থেকে নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করতে হবে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় রীতি-নীতিতে একজন নারীকে অসংখ্য ‘না’ এর মাঝে বেড়ে উঠতে হয়। এমনকি জোরে হাসলেও যেন একটি অপরাধ।

জাতীয় নারী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁয় পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত সভায় শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এতো বেশি ‘না’ ‘না’ শুনতে শুনতে একজন নারীর চারপাশে একটি শক্ত দেওয়াল তৈরি হয়। এটি ভেঙ্গে বের হওয়াই তো একজন নারীর জন্য শক্ত যুদ্ধ। অধিকাংশ মেয়েরা দেয়ালটা ভেঙে বের হতে পারে না। দেয়ালটাকে ভাঙার জন্য নারীকে সাহস জোগাতে হবে। নারীকে তার অন্তর নিহিত শক্তিটাকে উপলদ্ধি করতে হবে। সেই শক্তি দিয়ে নারীকে সব পেতে হবে।

তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালের নারী নীতিমালা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ১৯৯৭ সালের নারী নীতির মৌলিক কতগুলো বিষয় ছিলো। সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকারসহ বিভিন্ন মৌলিক বিষয় ছিলো। কিন্তু ২০০৫ সালে রাতের অন্ধকারে সেই নারী নীতিকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে একেবারে ধ্বংস করে দেওয়া হলো। কারণ তখন যে সরকার সেই সরকারের মূল অংশে ছিলো একটি মৌলবাদী দল।

‘‘মূল দলটিও নারী দিদ্বেষী, তার যথেষ্ট প্রমাণও আছে। নারী নীতিটাকে পাল্টে ফেলার পর যেটা হলো—আবার যখন ২০১১ সালে নারী নীতিটি করলাম, তখন মৌলিক যে পরিবর্তন আনা হয়েছিল, আমাদের রাজনীতির যে চেহারা এতোখানি পাল্টে গেল আমরা ১৯৯৭ সালের নীতিমালার মৌলিক জায়গায় ফিরে যেতে পারিনি। কিন্তু আমাদের ওই জয়গায় যেতে হবে।’’

আরও পড়ুন: জবিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত

নারীর অধিকার ও রাজনীতি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে রাজনীতি মানুষের স্বীকিৃত দেয় না। মানুষের অধিকারের স্বীকিৃতি দেয় না। নারীর মানবাধিকারের স্বীকৃতি দেয় না। সেই রাজনীতির কী দরকার? যারা যুদ্ধপরাধ করেছে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে, নারী নির্যযাতন করেছে যারা সেই অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, নারীর অধিকার লঙ্গণ করার সমস্ত কায়দা কানুন তাদের মাধ্যমেই হবে।

মন্ত্রীর প্রশ্ন তাহলে নারী কেনো সেই রাজনীতিকে সমর্থন দেবে? সমর্থন দেওয়া উচিত নয়। যারা প্রগতির কথা ভাবেন তাদেরও সেই রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার কারণ নেই। নারীর অধিকার তো রাজনৈতিক বিষয়। রাজনীতির বাইরে কোনো মানুষ নেই।

সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরর অবস্থান উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা চাকরিতে অনেক জায়গায় দেখছি নারী। ৭২-এর সংবিধানে নারীর সমানাধীকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আজ যারা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করেন সেখানেও ক্ষমতায়নে নারীর অবস্থান তৈরি হয়নি। এটি সত্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী, সংসদ উপনেতা, স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা নারী। অথচ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারীর অবস্থান এখনও কম।


সর্বশেষ সংবাদ