শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শুধু করোনা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৫৩ AM , আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:৫৩ AM
জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। এর ফলে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৪২৫ জনে। একই সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ১৪৫ জনের। এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ১১ হাজার ৯৮৭ জনে।
এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও গত ২১ জানুয়ারি থেকে দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ রেখেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখনও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির পরে এই ছুটি আরও বাড়ানো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখীর মধ্যেও সরকারি-বেসরকারি বাকি সব অফিস খোলা। চালু আছে কলকারখানাও। চলছে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনও।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হলে ১৭ মার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে টানা ৫৪৪ দিন পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর তা খুলে দেওয়া হয়। দেড় বছরের বেশি সময় পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও একসঙ্গে সব শ্রেণির ক্লাস শুরু করা যায়নি। এরই মধ্যে গত ২১ জানুয়ারি আবার বন্ধ করে দেওয়া হয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, করোনার কারণে শিক্ষাব্যবস্থায় এরই মধ্যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এভাবে আগামীতে টানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও বন্ধ রাখলে শিক্ষার দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হবে। এগুলো শিক্ষার জন্য অশনিসংকেত।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশিদিন স্কুল বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ। টানা বন্ধ রাখায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে না যেতে পারা শিক্ষার্থীরা বন্ধু-বান্ধবহীন হয়ে ফেসবুকে ঘুরে বেড়ায়, উদ্যমহীন হয়ে পড়ে, নানা সামাজিক সমস্যা তৈরি হয়। কন্যাশিশুদের বাল্যবিয়ে ও শিশুশ্রম বেড়ে যায়। এসব থেকে উত্তরণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ খোলা রাখতে হবে। আমি আশা করব, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, সবকিছু খোলা রেখে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলে এটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সব পথ খোলা, ভোটও হচ্ছে। অথচ যে শিক্ষার্থীদের হাতে আগামীর নেতৃত্ব, সেই তাদেরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমরা বন্ধ করে রাখছি।
তিনি আরও বলেন, সরকার হয়তো আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখছে। কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে এভাবে টানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলে শিক্ষার দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হবে।