ফিরছেন মুরাদ, প্রতিরোধের ডাক

ডা. মুরাদ হাসান
ডা. মুরাদ হাসান  © সংগৃহীত

বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে সদ্য তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানোর পর গত বৃহস্পতিবার ডা. মুরাদ হাসান কানাডার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করেন। সেখানে ঢুকতে চেয়ে ব্যর্থ হয়ে দুবাই বিমানবন্দরে আসেন এবং দুবাইয়ের ভিসা পাওয়ার অনেক চেষ্টা করেছেন, সেটাও ব্যর্থ হলো। অবশেষে আজ বিকেলেই দেশে ফিরছেন তিনি। বর্তমানে তিনি দুবাই বিমানবন্দরে অবস্থান করছেন।

সূত্র থেকে জানা গেছে, দুবাইয়ের ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা আর নেই তার। তাই আজ বিকেলে চূড়ান্তভাবে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডা. মুরাদ হাসান। দুবাই বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।

আরও পড়ুন: মুরাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন

সূত্র থেকে জানা যায়, বনানীর ডানা এভিয়েশন লিমিটেডের মাধ্যমে এমিরেটস এয়ারলাইন্সে দেশে ফেরার টিকিট চূড়ান্ত করেছেন ডা. মুরাদ হাসান। এমিরেটসের ইকে-৫৮৬ নম্বর ফ্লাইটটি বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। ফ্লাইটের ফার্স্ট ক্লাস ক্যাটাগরির টিকেট কেটেছেন মুরাদ। বর্তমান করোনা টেস্টের স্যাম্পল দিয়ে দুবাই বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৩-এ এমিরেটসের লাউঞ্জে অবস্থান করছিলেন তিনি।

এদিকে মুরাদ হাসান যাতে দেশে ফিরতে না পারেন, এজন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেছেন বেশ কয়েকজন। বিমানবন্দর এলাকার মূল ফটকের বাইরের সড়কে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন নিজেদের আওয়ামী লীগের কর্মী দাবি করে মুরাদকে রুখে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: যুদ্ধাপরাধীরা দেশে থাকতে পারলে মুরাদ হাসানের সমস্যা কি?

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন বলেন, মুরাদ সম্প্রতি বির্তকিত কথাবার্তা বলছিল। ইসলাম ও নারীবিদ্বেষী ছিল। সে প্রতিনিয়ত দাবি করতো, তার এসব বেফাঁস কথাগুলোর বিষয় নাকি প্রধানমন্ত্রীও অবগত আছেন। তার এই মন্তব্য নারী সমাজকে অপমান করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিব্রত করেছে। আমরা চাই উনার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হোক। তাকে দেশের ভেতরে ঢুকতে না দেওয়া হোক।

আরও একজন বিক্ষোভকারী বলেন, দেশের নারীদের বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের নারী নেতৃত্ব, চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে অশ্রাব্য ভাষায় কথাবার্তা বলেছেন মুরাদ। কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। আমরা এগুলোর প্রতিবাদে দাঁড়িয়েছি। মুরাদকে যেহেতু কানাডা ও দুবাই থাকতে দেয়নি, আমরা চাই এমন লোক যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে। মুরাদকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা মাত্র গ্রেফতার করার অনুরোধ করছি আমরা। সেজন্য আমরা এখানে মানববন্ধন করেছি। বিকেলে আমরা আবার আসবো।

আরও পড়ুন: পদত্যাগ করেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ

প্রসঙ্গত, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি জায়মাকে নিয়ে মুরাদ হাসানের মন্তব্যের ব্যাপারে সমালোচনার মধ্যেই একটি টেলিফোন আলাপ ফাঁস হয় গত রোববার। তখন তীব্র নিন্দার মুখে তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চলে যান। এরপর গত সোমবার রাত প্রধানমন্ত্রী তাকে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। পরদিন মঙ্গলবার তিনি পদত্যাগ পত্র পাঠান।

মঙ্গলবার বিকেলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় মুরাদ হাসানকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার তাকে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে মুরাদ হাসানকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ