আরও একমাস বাড়তে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ মে ২০২১, ০৮:০৪ AM , আপডেট: ২২ মে ২০২১, ০৮:৪৯ AM
করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় ১৪ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২৯ মে পর্যন্ত ছুটি থাকবে। এরপর স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি এখনও ঊর্ধ্বমুখী। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্টরা ইঙ্গিত দিয়েছে। এমনকি আগামী জুনজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা সংক্রমণ যদি পাঁচ শতাংশের নিচে নামে, তাহলে প্রথমে শুধু এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হতে পারে। এবার তাদেরকে অটোপাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসায় ক্লাস করাতে তোড়জোড় চলছে। তবে কবে ক্লাস শুরু হবে, আর কবে পরীক্ষা নেওয়া যাবে তা জানা নেই কারো। কারণ এখনও দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার আট শতাংশের ওপর। আবারও বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণের হার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কথায়, করোনা সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়। তবে ভারতে করোনার বড় ধরনের ঢেউ চলছে। ওই দেশের ভ্যারিয়েন্ট এখন আরও উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। সে কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে সময় নিচ্ছেন তারা। এতে সংক্রমণ কমলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে আরও সময় নেওয়া হতে পারে।
এ ক্ষেত্রে জুন মাসও অপেক্ষা করতে হতে পারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। এ ধরনেরই চিন্তা রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির পরামর্শে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। আগামী ২৮ মে সে সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হবে।
লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সুপারিশ
এ প্রসঙ্গে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, এখন সরকারের অগ্রাধিকার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা যে কোনো মূল্যে নেওয়া। গত বছরের মতো ফল বা গ্রেড দেওয়া হবে না। করোনা সংক্রমণ কমলে ‘কাস্টমাইজড’ সিলেবাসে নির্ধারিত ক্লাস হবে। এরপরই পরীক্ষা হবে। কিন্তু কবে পরীক্ষা নেওয়া যাবে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে তা নিশ্চিত নয়। কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি। তবে পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি আছে বলে জানান তিনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা জানান, করোনা সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে নামলে শুধু এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার্থীদের জন্য ক্লাস শুরু হবে। শিক্ষা বোর্ডগুলো থেকেও এ ব্যাপারে পরামর্শ আছে। পরিস্থিতি আরেকটু উন্নতি হলে পঞ্চম শ্রেণির সঙ্গে নবম ও একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা আছে।
অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, এখন অত্যন্ত জরুরি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করা। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার ওপর এটি নির্ভর করবে। জেএসসির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি অনুকূলে না এলে ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পদোন্নতি দেওয়ার নীতি অনুসরণ করা হবে। এসএসসি পরীক্ষা আগে নেওয়া হয়। পরীক্ষাটি নিতে সব প্রস্তুতি আছে বলে তিনি জানান।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে ৬০ কর্মদিবস এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস হবে। আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস হবে ৮৪ কর্মদিবস। সে অনুযায়ীই সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। এখন এ সংখ্যক ক্লাসও কবে নেওয়া যাবে সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।