তনু হত্যার চার বছর
বিচার নিয়ে তনু পরিবার-পুলিশের আর যোগাযোগ হয় না
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২০, ০৮:৫৪ AM , আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০, ০৮:৫৪ AM
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার চার বছর পূর্ণ হলো আজ। হত্যাকাণ্ডের চার বছর পেরোলেই মামলার উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। এদিকে তনুর পরিবারের অভিযোগ- মামলা তদন্তকারীরা আর তাদের সাথে যোগাযোগ করেন না।
মামলার বাদী তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আর আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন না। তার জন্যই মামলার কার্যক্রম থেমে আছে। মেয়ে হত্যার বিচার এখন আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছি। এছাড়া আর কিছু দেখছি না।
তনুর পরিবারসূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভিতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর ফেরেননি তনু। পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভিতর একটি জঙ্গলে তনুর লাশ পান। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি, কুমিল্লা।
তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। ২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি তনুর জামাকাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচ করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কি না এ নিয়েও সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না। সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরা তনুর মায়ের সন্দেহভাজন আসামি বলেও সিআইডি জানায়। তবে তাদের নাম জানানো হয়নি।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সারা বাসায় মেয়ের স্মৃতি। সে বাসা সাজিয়েছে। যেদিকে তাকাই তাকে দেখি। তাকে ভুলতে পারি না। মেয়ের কাপড়গুলো রেখে দিয়েছি। মাঝে মাঝে বের করে দেখি। কাপড়ে মেয়ের গায়ের ঘ্রাণ নিই আর চোখের পানি ফেলি। দুই বছর ধরে সিআইডি কোনো যোগাযোগ করছে না। তনুর বাবা ও আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছি। আগের মতো বিভিন্ন অফিসে যেতে পারি না। মৃত্যুর আগে মেয়ে হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মেয়ে হত্যার বিচার চাওয়ার সুযোগ পেলে ভালো লাগত। শুক্রবার মসজিদে দোয়ার আয়োজন করব।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডি, কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ডিএনএ পরীক্ষা এবং ম্যাচ করার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। ডিএনএর রিপোর্ট এখনো হাতে পাইনি। পেলে এগিয়ে যেতে পারব।’