বিসিএসের ২২৭ জন এবং প্রশিক্ষণরত ২৫২ এসআইকে বাদ কেন, জানতে চায় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক  © লোগো

৪৩তম বিসিএসে সুপারিশ পাওয়া ২২৭ জন এবং রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে মৌলিক প্রশিক্ষণরত ২৫২ উপপরিদর্শককে (এসআই) বাদ দেওয়ার ‘যথোপযুক্ত কারণ’ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। শিক্ষকেরা বলেছেন, জনগণের অংশ হিসেবে তারা এর কারণ জানতে চান। সরকারের প্রদর্শিত যুক্তির গ্রহণযোগ্যতা না থাকলে অবিলম্বে এই প্রার্থীদের পুনর্ভুক্তির পক্ষে তারা সরব থাকবেন।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে সংগঠনটির পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন এটি। বিবৃতিতে ৪৮ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের গোড়ার কথা ছিল বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন। আমরা এখনো প্রত্যাশা রাখি, বাংলাদেশ সেই পথ থেকে বিচ্যুত হবে না। কিন্তু আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই প্রত্যাশা ও বাস্তবতার মধ্যে ফারাক থাকছে এবং ক্ষেত্রবিশেষে জবাবদিহির অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত ২ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নবনিয়োগ শাখা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিসিএসে নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃত ২২৭ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছে। অথচ বাদ পড়া প্রার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত!...আমরা মনে করি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গেজেটভুক্তদের বাদ দেওয়ার যে কৈফিয়ত দেওয়া হয়েছে, তা আদতে একটি ভিত্তিহীন ব্যাখ্যা!...এই বিজ্ঞপ্তি প্রশাসনিক জবাবদিহির অভাবকেই প্রকারান্তরে সামনে উপস্থাপন করছে।’

বিবৃতিতে সারদায় প্রশিক্ষণরত ২৫২ উপপরিদর্শককে অব্যাহতির প্রসঙ্গেও বলা হয়। তাঁরা বলেন, গত বছরের অক্টোবরে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে মৌলিক প্রশিক্ষণরত ২৫২ উপপরিদর্শককে (এসআই) ‘শৃঙ্খলাভঙ্গের’ কারণ দেখিয়ে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অথচ এ ব্যাপারে এখনো বিস্তারিত কিছুই সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জাতির উদ্দেশে জানায়নি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ব্যক্তির যোগ্যতা পরিমাপের ক্ষেত্রে যেকোনো বাছাইপ্রক্রিয়ায় ব্যক্তির পারফরম্যান্সকে (নৈপুণ্য) দেখা হয়। কারণ, পারফরম্যান্স হলো ব্যক্তির যোগ্যতার দৃশ্যমান প্রতিফলন। বিসিএসসহ অন্য চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে এই পারফরম্যান্স হতে হয় মেধানির্ভর। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, পদ্ধতিকে তোয়াক্কা না করে পারফরম্যান্সের বিপরীতে পরিচয়কে জায়েজ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে, নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়কে “অযোগ্য” বিবেচনা করা হচ্ছে। পরিচয়ের এই রাজনীতি বিভেদমূলক এবং সে কারণেই অন্যায্য।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকদের মধ্যের আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুশাদ ফরিদী, তাসনীম সিরাজ মাহবুব, কাজলী সেহরীন ইসলাম, আসিফ মোহাম্মদ শাহান, কামাল চৌধুরী, কামরুল হাসান মামুন, জোবাইদা নাসরীন, মোশাহিদা সুলতানা, গীতি আরা নাসরীন ও মার্জিয়া রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বাধীন সেন, শরমিন্দ নীলোর্মি প্রমুখ। আরও আছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ফাহমিদুল হক।


সর্বশেষ সংবাদ