জুমার নামাজ না পেলে কী করবেন

  © সংগৃহীত

সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হলো শুক্রবার। আর শুক্রবারের শ্রেষ্ঠ নামাজ হলো জুমা। জুমার নামাজের বিভিন্ন ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, জুমা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দিবস।

তিনি আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে ওজু করে জুমার নামাজ পড়তে আসবে, তার পূর্ববর্তী জুমা থেকে বর্তমান জুমা পর্যন্ত সংঘটিত গুনাহগুলো মাফ হয়ে যায়।’

জুমার নামাজ পড়া আল্লাহ তাআলার নির্দেশ। শুক্রবার জোহরের ওয়াক্তে এ নামাজ পড়তে হয়। আল্লাহ তাআলা ইমানদার বান্দাকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! জুমার দিন (শুক্রবার) যখন নামাজের জন্য (আজানের মাধ্যমে) আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা দ্রুত আল্লাহর স্মরণে ছুটে চল এবং বেচাকেনা বন্ধ করে দাও। এটি তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা উপলব্দি করতে পার।’ (সুরা জুময়া : আয়াত ৯)

কোরআনে এ আয়াতের মাধ্যমে জুমা আদায় করা মানুষের জন্য আবশ্যক করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি মুসলিমকে অবশ্যই জুমার নামাজ গুরুত্বসহ পড়া উচিত। হাদিসে প্রত্যেকে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য জুমা আবশ্যক।

হজরত হাফসা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব তথা অপরিহার্য কর্তব্য।’ (নাসাঈ)

আবার জুমার নামাজ ছেড়ে দেওয়া মারাত্মক অপরাধ। আল্লাহর বিধানের লঙ্ঘন। কেননা জুমা নামাজ পড়া আল্লাহর নির্দেশ। যারা এ নামাজ ছেড়ে দেয়, তাদের প্রসঙ্গে হাদিসের ভয়বাহ অপরাধ ও শাস্তির কথা বর্ণনা করা হয়েছে।

হাদিসে এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অবহেলা ও অলসতা করে পর পর তিন জুমা নামাজ পা ছেড়ে দেবে, মহান আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দেবেন।’ (আবু দাউদ)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ওজর ও অনিষ্টের ভয় ছাড়া জুমা নামাজে অংশ গ্রহণ করে না, ওই ব্যক্তির নাম মুনাফিকের এমন দপ্তরে লেখা হয়, যেখান থেকে তার নাম কখনো মোছা কিংবা রদবদল করা হয় না।’

জুময়া নামাজে মাসবুক হলে

১. কোনো ব্যক্তি যদি জুমার নামাজ পড়তে এসে এক রাকাআত পান, তবে সে ইমামের সালাম ফেরানোর পর বাকি এক রাকাআত পড়ে নিলেই জুমা আদায় হয়ে যাবে।

২. অনুরূপভাবে কেউ দ্বিতীয় রাকআতের রুকুর আগে ইমামের সঙ্গে নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারলে ইমামের সালাম ফেরানোর পর দুই রাকাআত আদায় করলে জুমার নামাজ আদায় হয়ে যাবে।

৩. নামাজের দ্বিতীয় রাকআতে রুকুর পর জামাআতে অংশগ্রহণ করে, তবে তার এ অংশগ্রহণ জুমা হিসেবে বিবেচিত হবে না। বরং তাকে ইমামের সালাম ফেরানোর পর চার রাকাআত নামাজ আদায় করতে হবে।

অংশগ্রহণের সময় জোহরের চার রাকাআত নামাজ আদায়ের নিয়তে শামিল হবে এবং তা আদায় করে নেবে। হাদিসে এসেছে-

হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার এক রাকআত পেয়ে যায়, সে ব্যক্তি যেন আর এক রাকআত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকআতের) রুকু না পায়, সে যেন জোহরের চার রাকআত পড়ে নেয়।’ (তাবারানি, বায়হাকি, মুসান্নেফে ইবনে আবি শায়বা)

৪. আর যদি কোনো ব্যক্তি জুমার নামাজ না পায় বা মসজিদে গিয়ে দেখে জুমার নামাজ শেষ হয়ে গেছে, তবে ওই ব্যক্তি জোহরের চার রাকাআত নামাজ পড়ে নেবে। কারণ জামায়াত ছাড়া একা একা জুমার নামাজ পড়া যায় না।

যারা জুমা নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাবে, তারা অবশ্য মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনবে। কোনো ধরনের কথা না বলে ইমামের খুতবায় গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা জুমার খুতবা শোনা মুসল্লির জন্য ওয়াজিব।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত জুমা গুরুত্বসহ আদায় করা এবং জুমার খোতবা মনোযোগের সঙ্গে শোনা। একান্তই যদি কেউ নামাজ না পায়, তবে জোহরের নামাজ আদায় করে নেওয়া।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে মনোযোগের সঙ্গে যথাযথভাবে পবিত্র জুময়া আদায় করে এ দিনের আদব ও আমলগুলো সঠিকভাবে করার তৌফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।


সর্বশেষ সংবাদ