চাকরি ফেরত চেয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে দুদকের সেই শরীফের চিঠি

মো. শরীফ উদ্দিন
মো. শরীফ উদ্দিন  © সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন চাকরিতে পুনর্বহাল করার আবেদন করেছেন। গত ১৮ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা বরাবর তিনি আবেদন করেন।

জানা গেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়। এরপর হাসিনা সরকারের আমলে অত্যাচার-অবিচারের শিকার হওয়া বেশির ভাগ ব্যক্তিরা তাদের অধিকার ফিরে পান। কিন্তু দুদকের শরীফকে তার চাকরি ফেরত দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি মানবিক আবেদন করেন শরীফ উদ্দিন। এতে নিজের করা সাহসী নানা অভিযানের তথ্য উল্লেখ করা হয়। সার্বিক বিষয় পুনর্বিবেচনা করে তার চাকরি ফেরত দেওয়ার আবেদন করেন শরীফ।

এ বিষয়ে মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘আমার যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই। দুদকে চাকরি পেয়ে একের পর এক দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছি। রাঘববোয়ালদের আইনের আওতায় এনেছি। কোনো ধরনের আপস করিনি। এটাই আমার কাল হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই আমাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। আমার পুরো ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে চাকরিটি হারিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে স্বয়ং শেখ হাসিনা নেগেটিভ ছিলেন। এ কারণে চাকরিটার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে নতুন এক দেশ পেয়েছি। দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠনে গর্বিত অংশীদার হতে চাই। আমার অবৈধ বরখাস্তের আদেশ বাতিল করে আমাকে নতুন করে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বরাবর দেওয়া আবেদনে শরীফ উল্লেখ করেন, ‘আমি দুদকের উপসহকারী পরিচালক হিসেবে ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২২ সালে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাত বছর ৪ মাস ন্যায় নিষ্ঠা ও কর্তব্যপরায়ণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। দুদকের একজন নবীন কর্মকর্তা হয়েও বিভিন্ন দুর্নীতি বিষয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা ও ২০টির বেশি সিএস (চার্জশিট) দাখিল করেছি। কর্মকালীন সময়ে দেশের জনগুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর অনেক বিষয় যেমন- কক্সবাজার এল এ শাখার সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতিতে প্রায় ৬০০ পাতার ১৫৫ জনকে চার্জশিটভুক্ত করে আসামির সুপারিশ করেছিলাম।’

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে দায়িত্ব পালনকালে মো. শরীফ উদ্দিন একের পর এক দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনেন। যা তাকে সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিতি এনে দেয়। উপসহকারী পরিচালক পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় তার দায়ের করা মামলাগুলোর বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ছিল। এই কারণে প্রভাবশালী মহলের চাপে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত, ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। ওই সময় তাকে অপসারণের প্রতিবাদে আন্দোলন হয় সারা দেশে।


সর্বশেষ সংবাদ