জুলাই আন্দোলনের নেপথ্যের ১০ অনুঘটকের তথ্য প্রকাশ জুলকারনাইন শায়েরের

জুলকারনাইন সায়ের খান সামি
জুলকারনাইন সায়ের খান সামি  © সংগৃহীত

জুলাই আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটেছে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে এই আন্দোলনের নেপথ্যে থাকা অনুঘটকদের ভূমিকা তুলে ধরেছেন আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামি।    

পোস্টে জুলকারনাইন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েমকে জুলাই আন্দোলনের 'প্লে-মেকার' (প্রধান কারিগর) আখ্যা দিয়ে লিখেছেন, 'সাদিকের নেতৃত্ব জিনেদিন জিদান, জাভি, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, আন্দ্রেয়া পিরলো বা লুকা মড্রিচের মতোই সুনিপুণ। তার দক্ষ সমন্বয় ও এবং নেতৃত্ব ছাড়া জুলাই আন্দোলন অনেক আগেই থেমে যেত।'

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ফুটেজ সম্প্রচার করা টিভি সাংবাদিক ও চ্যানেলগুলোর অবদানকে স্বীকার করে তিনি লেখেন, 'আবু সাঈদের মৃত্যু কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ব্যাপক গণজাগরণে রূপান্তরিত করেছিল। সাহসী টিভি সাংবাদিক ও চ্যানেল চ্যানেলগুলোর জন্যই এটি সম্ভব হয়েছে।'

সাংবাদিক প্রভাস আমিনের কথা উল্লেখ করে জুলকার নাইন তার পোস্টে লিখেছেন, 'ভাবুন তো, যদি প্রেস কনফারেন্সে তার সেই  প্রশ্নটা না থাকত, তাহলে কি আমরা এতটা ক্ষোভে ফুঁসতাম? কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলো কি মাঝরাতে 'তুমি কে আমি কে' স্লোগানে জেগে উঠত?

 বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে সহায়তাকারীদের অবদানকে স্বীকার করে তিনি লেখেন, 'আন্দোলনের সময় ঝুঁকি নিয়ে যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে সহায়তা করেছেন, তাদের নাম গোপন থাকলেও তাদের অবদান স্বীকার্য।

আন্দোলনে পিনাকী ভট্টাচার্য, ড. জাহেদ ও ইলিয়াস হোসাইনের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি লেখেন, 'তাদের ইউটিউব কার্যক্রম আন্দোলনের বীজ বুনে দেয়। পিনাকী ভট্টাচার্যের ভিডিও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিদ্রোহের মনোভাব তৈরি করে।  ইলিয়াস হোসেনও তৃণমূল পর্যায়ে প্রচণ্ড প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। ড. জাহেদের চিন্তাশীল ভিডিও শিক্ষিত সমাজকে প্রভাবিত করেছে।'

এএফপির প্রাক্তন ব্যুরো চিফ শফিকুল আলমের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি লেখেন, 'ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের সময়, এএফপি'র অফিসে ইন্টারনেট সংযোগ ছিল এবং শফিক ভাই একটি বিশাল ঝুঁকি নিয়ে বিদেশি মিডিয়ার সকল সাংবাদিকদের এএফপি'র ভিএসএটি ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দেন। এর মাধ্যমে তারা তাদের রিপোর্ট, ছবি এবং ফুটেজ পাঠাতে সক্ষম হন।'  

রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলের কেনা ১৫ লাখ টাকার ছাগলের কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, 'এই ঘটনা শেখ হাসিনার মাফিয়া শাসনের দুর্নীতির গভীরতা উন্মোচিত করে। এটি কোটা আন্দোলনের সময় মানুষকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তোলে। পোস্টে  জুলকারনাইন এই ঘটনা উন্মোচনে যারা সাহায্য করেছেন তাদের  ধন্যবাদ জানিয়েছেন।  

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে নিয়ে জুলকারনাইন পোস্টে লেখেন,  'তার ধারাবাহিক আইনি লড়াই শেখ হাসিনার প্রতিহিংসাপূর্ণ শাসনের প্রকৃতি উন্মোচন করে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করে।

এছাড়াও  বিএনপি, তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, শফিকুর রহমান, মায়ের ডাক, ওয়াকার উজ জামান এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে জুলকারনাইন লিখেছেন, 'এই পোস্টে তাদের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়নি কারণ আমরা সবাই তাদের গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের জন্য চলমান লড়াইয়ে ভূমিকা সম্পর্কে অবগত। নতুন বছরে তাদের ভূমিকা আরও দৃঢ় এবং ফলপ্রসূ হবে বলেও  প্রত্যাশা করছি।' 


সর্বশেষ সংবাদ