রাঙামাটিতে প্রিপেইড মিটার প্রদান বন্ধসহ ১৬ দফা দাবিতে স্মারকলিপি
- রাঙামাটি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৫ PM , আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৫ PM
জোরপূর্বক গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার প্রদান কার্যক্রম বন্ধসহ গ্রাহকদের ভোগান্তি নিরসনে ১৬ দফা দাবিসংবলিত স্মারকলিপি রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে দিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রাঙামাটির নেতারা।
আজ রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কার্যালয়ে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপি পেশকালে উপস্থিত ছিলেন সুজন রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যা, সম্পাদক এম জিসান বখতিয়ার, সুজন সদর উপজেলার সভাপতি পলাশ কুসুম চাকমা, সম্পাদক শংকর হোড়, পৌর কমিটির সভাপতি ইন্দ্রদত্ত তালুকদার, সম্পাদক মো. এরফানুল হক রুমেল, সুজন বন্ধু জেলা কমিটির সভাপতি মিশু দে প্রমুখ।
বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দীন, সহকারী প্রকৌশলী খন্দকার রোকনুর জামান, উপসহকারী প্রকৌশলী রঞ্জু আহমেদ।
স্মারকলিপিতে সুজন নেতারা জানান, পূর্ববর্তী সরকার দেশকে ডিজিলাইজেশনের নামে ঘরে ঘরে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাঙামাটি পৌর এলাকায় প্রথম দিকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হয়। বর্তমানে পৌর এলাকায় বাসাবাড়িতে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কার্যক্রম চলমান। পৌর এলাকার দুই-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ গ্রাহককে ইতোমধ্যে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হয়েছে। প্রিপেইড মিটার স্থাপনের পর গ্রাহকদের বিভিন্ন অভিযোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনা জরুরি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর পক্ষ থেকে গ্রাহকদের বিভিন্ন অভিযোগ ও দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হয়েছে। এসব অভিযোগ করা ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন এবং জোরপূর্বক প্রিপেইড মিটার প্রদান না করার কথা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘আমরা এসব দাবি প্রজেটিভলি গ্রহণ করেছি। সমস্যাগুলো সমাধানে কার্যকর প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। গ্রাহকদের জোরপূর্বক প্রিপেইড মিটার প্রদান করা হচ্ছে না। তাদের সাথে আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কাজ করছি।’
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল আছে, চেহারা নেই রাঙ্গামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে
সুজনের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত অভিযোগ ও দাবিগুলো হলো-১. জোরপূর্বক প্রিপেইড মিটার নিতে বাধ্য করা বন্ধ করতে হবে; ২. প্রিপেইড মিটার না নিলে লাইন কাটা বন্ধ করতে হবে; ৩. লোড বাড়ানোর জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে;
৪. প্রতি মাসে মিটারের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে, এটা কত মাস পর্যন্ত নেওয়া হবে, তা গ্রাহককে জানিয়ে দিতে হবে; ৫. প্রিপেইড মিটারের গ্রাহককে সব সেবা নিতে বিদ্যুৎ অফিসে যেতে হয়, এমন অভিযোগ যা কোনোভাবেই কাম্য নয়; ৬. যে কোনো কারণে লাইনে টান পড়লে মিটার লক (বন্ধ) হয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে; ৭. মিটারের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেলে ব্যাটারি স্থাপনে গ্রাহককে চার্জ প্রদান করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে একটি মিটার কত দিন পর্যন্ত ওয়ারেন্টি/গ্যারান্টি থাকবে সেটা গ্রাহককে জানিয়ে দিতে হবে; ৮. মিটার নষ্ট হলে গ্রাহককে পুনরায় ৭-৮ হাজার টাকা দিয়ে মিটার স্থাপন করতে হয়। সে ক্ষেত্রে পুনরায় মিটারের প্রতিমাসের ভাড়া কাটা হচ্ছে।
এ ছাড়া ৯. লোড/কিলো কমানোর সুযোগ দিতে হবে; ১০. কোনো প্রকার পূর্ব নোটিশ বা ঘোষণা ছাড়া মিটার লক করে দেওয়া বন্ধ করতে হবে। যেকোনো অভিযোগের বিষয়ে গ্রাহককে আগেভাগেই জানাতে হবে; ১১. প্রিপেইড মিটারের ক্ষেত্রে বিল বেশি কাটার অভিযোগ রয়েছে; ১২. রিচার্জের তিন ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় রিচার্জ করতে না পারার নিয়ম পরিবর্তন করতে হবে; ১৩. প্রাথমিক পর্যায়ে যে সকল মিটার লাগানো হয়েছিল, সেসব মিটারে এনালগ পদ্ধতিতে নাম্বার দিয়ে ইউনিট ক্রয় করতে হচ্ছে। সব প্রিপেইড মিটারে সরাসরি টাকা ঢুকানোর ব্যবস্থা করতে হবে; ১৪. মিটারে কত টাকা আছে সেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইলে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
আরও পড়ুন: স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
১৫. নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বাক্ষর প্রয়োজন যা গ্রাহকরা খুঁজেই পাচ্ছে না। যার কারণে বেশি টাকায় গ্রাহকদের চুক্তিতে যেতে হয় এবং ১৬. প্রিপেইড মিটার নেওয়ার প্রায় এক বছর পর আগের বকেয়া বিল রয়েছে বলে গ্রাহকদের কাছে বিল পাঠানো এবং সেটা দিতে অপারগতা দেখালে মিটার লক করে দেয়া হচ্ছে। অন্তত মিটার স্থাপনের ক্ষেত্রে কোনো বকেয়া থাকলে সেটা আগেই গ্রাহককে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দিতে হবে।