আমি পেশাদার সাংবাদিক, কোনোদিন সরকারের সুবিধা নেইনি: শ্যামল দত্ত

শ্যামল দত্ত
শ্যামল দত্ত  © সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোনো দিন কোনো সুবিধা নেননি বলে দাবি করেছেন ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। তিনি বলেন, ‘আমি একজন পেশাদার সাংবাদিক। আমি কোনোদিন সরকারের সুবিধা নেইনি। কোনো প্লট নেইনি। আমি জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। সম্পাদক পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট। সরকারের নির্দেশনা আছে সাংবাদিককে গ্রেপ্তার না করা। তারপরও আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ 

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহের আদালতে শুনানিকালে এসব কথা বলেন ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত। পরে ফজলু হত্যার অভিযোগে ভাষানটেক থানায় করা মামলায় শ্যামল দত্তের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ফজলু নামে এক যুবক নিহতের ঘটনায় রাজধানীর ভাসানটেক থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। রিমান্ড শুনানির শুরুতে শ্যামল দত্তের বক্তব্য শুনতে চান বিচারক। 

এরপর আদালতকে ভোরের কাগজ সম্পাদক বলেন, আমি পেশাদার সাংবাদিক। ৩৭ বছর সাংবাদিকতা করেছি। ৩৩ বছর একই হাউসে আছি। আমি কোনো দিন সরকারের সুবিধা নেইনি। কোনো প্লট নেইনি, টিভি নেইনি। আমি জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। সম্পাদক পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম না। সরকারের নির্দেশনা আছে, যাচাই-বাছাই না করে যেন সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা না হয়। তারপরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার চাই।

এরপরই আসামিপক্ষের আইনজীবী শ্যামল কান্তি সরকার আদালতে বলেন, আসামি শ্যামল দত্ত নির্দোষ। তিনি ঘটনার সময় ঢাকাতেই ছিলেন না। তিনি অসুস্থ। তাকে রিমান্ডে না নিয়ে জামিন মঞ্জুর করুন। এ সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, শ্যামল দত্ত নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন। তাহলে মোজাম্মেল হক বাবুর সঙ্গে কেন পালাতে গেলেন। তার ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে প্রার্থনা করছি। শুনানি শেষে আদালত শ্যামল দত্তের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে এদিন সকাল সাড়ে ৯টা ২১ মিনিটের দিকে শ্যামল দত্তকে ডিবি কার্যালয় থেকে সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর সেনাবাহিনী ও পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় তাকে এজলাসে তোলা হয়। পরবর্তী সময়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. সাহিদুল বিশ্বাস ভোরের কাগজ সম্পাদককে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। রিমান্ডের আদেশ শেষে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।

এর আগে গত সোমবার ভোর ৬টার দিকে ধোবাউড়া উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ও পোড়াকান্দুলিয়া এলাকা থেকে শ্যামল দত্তকে আটক করা হয়। এদিকে তাকে যে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়, তার এজাহার থেকে জানা যায়- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ভাসানটেক থানাধীন এলাকায় বিজয় মিছিল করতে গেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে ফজলু মারা যান। 

পরে গত ১১ সেপ্টেম্বর নিহত ফজলুর ভাই সবুজ বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এ মামলার এজাহার নামীয় ২৮ নম্বর আসামি হিসেবে শ্যামল দত্তকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। 


সর্বশেষ সংবাদ