একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাবিজ্ঞানী ড. মনিরুজ্জামান মারা গেছেন
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৪৯ AM , আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৮:১৯ AM
একুশে পদকপ্রাপ্ত গবেষক ও ভাষাবিজ্ঞানী ড. মনিরুজ্জামান মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক ডীন ছিলেন প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান। এ ছাড়া বাংলা বিভাগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি এবং কলা অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেন।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নরসিংদীর স্থানীয় কবি ও লেখক মহসিন খন্দকার এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
মহসিন খন্দকার বলেন, ‘বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় রায়পুরা উপজেলার নিজ গ্রাম আদিয়াবাদে জানাজা শেষে তার মরদেহ সেখানেই দাফন করা হবে।’
এর আগে, ২০১২ সালে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। নিয়মিত চিকিৎসায় তখন কিছুটা সুস্থ হলেও গেল বছরের ডিসেম্বরে তার অবস্থার অবণতি হয়। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাকে রেডিও থেরাপি দেওয়া হয়। এরপর থেকে চিকিৎসকের নির্দেশে রাজধানী ঢাকায় নিজ বাসভবনে চিকিৎসা নিতে থাকেন তিনি।
তবে বিগত কয়েক দিনে তার শরীরে ইন্টারনাল ব্লিডিং হওয়ার ফলে তিনি এনিমিক হার্ট ফেলিওর অবস্থায় চলে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাজধানী ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি ইন্তেকাল করেন।
ড. মনিরুজ্জামান ১৯৪০ সালের ১৫ ফ্রেরুয়ারি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মো. নাদিরুজ্জামান, মা মোসাম্মৎ ফরিদান্নেছা। পুলিশ অফিসার বাবার কর্মস্থল ছিল ব্রিটিশ ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার ঝিনাইদহে। তিনি প্রথমে নৈহাটি, পরে বরানগর, এরপর চব্বিশ পরগনা স্কুল ডায়মন্ড হারবারে পড়াশোনা করেন। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় চলে আসেন পৈতৃক গ্রাম আদিয়াবাদে। সেখানে গ্রামের স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন।
এরপর ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে ভর্তি হয়ে ১৯৬০ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৬১ সালে স্নাতকোত্তর পাস করেন। পরবর্তীতে ভারতের মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি করেন।
তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটের পরিচালক ছিলেন। ভাষা, সাহিত্য ও ফোকলোর বিষয়ে তার ৩৫টির মতো বই ও শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, চট্টগ্রাম একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ২০২৩ সালে একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।