ড. ইউনূসকে বিভিন্ন দেশে-সংস্থার অভিনন্দন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪, ১১:২১ AM , আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৪, ০১:৫১ PM
ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে দুঃশাসন মুক্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেয়া নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও জোট। তারা নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আশা করেছে, এ সরকার গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরে কাজ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে অন্তর্বর্তী সরকার কী পরিকল্পনা নেয়, ওয়াশিংটন তা দেখতে চায়। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এছাড়াও তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ রয়েছে। ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আমরা চাই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও ড. ইউনূস বাংলাদেশের জন্য একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ তৈরি করুক। আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও জনগণকে যে কোনো সহযোগিতা দিতে জাতিসংঘ প্রস্তুত। নিউইয়র্কে সংস্থাটির সদরদপ্তরে বৃহস্পতিবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান জাতিসংঘ মহাসচিবের উপমুখপাত্র ফারহান হক।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কিনা বা তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন কিনা।
জবাবে ফারহান হক বলেন, তিনি তাঁর সঙ্গে কথা বলেননি। তবে বাংলাদেশে নিযুক্ত আবাসিক সমন্বয়ক শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া যেন শান্তিপূর্ণ হয়, তা নিশ্চিত করতে তিনি ও কান্ট্রি টিম সক্রিয় রয়েছেন।
চীনও বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে। একই সঙ্গে দেশটি দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে প্রশ্নের জবাবে এক মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়টি চীন অবহিত এবং তারা এ সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে। চীন নীতিগতভাবে যে কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরোধী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে যে উন্নয়নের পথ বেছে নিয়েছে, তার প্রতি আমাদের সম্মান রয়েছে। আমরা আমাদের ভালো প্রতিবেশী এবং বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্বের নীতিতে অটল রয়েছি।’
ওই মুখপাত্র বলেন, চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের এবং এই সম্পর্ক অনেক গভীর। চীন বাংলাদেশের সঙ্গে এই সম্পর্ককে মূল্যবান মনে করে। নানা ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ ও সহযোগিতার উন্নয়ন এবং সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বকে আরও এগিয়ে নিতে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ড. ইউনূসের সুবিশাল অভিজ্ঞতা জাতিকে প্রজ্ঞা ও সততার সঙ্গে পরিচালিত করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি নতুন দিনের উদয় হয়েছে, তরুণদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নবশক্তির। ইতিহাসের এ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমি বাংলাদেশের জনগণের সাফল্য ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
ড. ইউনূসকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশকে একটি সম্প্রীতিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করার ক্ষেত্রে মুহাম্মদ ইউনূসের মহান সাফল্য কামনা করছি। আমি সামনের দিনগুলোতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও গভীর করতে তাঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ।’
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ‘ভারত-সমর্থিত সরকারের’ অধীনে ছিল। ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন আন্দোলনের মুখে সেই সরকারের পতন ঘটেছে। আমাদের প্রত্যাশা, অতীতের যাবতীয় তিক্ততা ভুলে নতুন সরকারের আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করবে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে চান তারা। তারা গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের যে কাজ করবে, তাতে ইইউ সহায়তা করবে। এই প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে।’
ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল শুক্রবার ফেসবুকে তাঁর ভেরিফায়েড পেজে লিখেছেন, ‘ড. ইউনূসসহ বাংলাদেশে যারা কার্যভার গ্রহণ করেছেন, তাদের প্রতি আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভকামনা রইল। আশা করি, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।’
ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে নতুন দায়িত্বে তাঁর সাফল্য কামনা করেছেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোয়ান। তুরস্কের দৈনিক সাবাহ এ খবর দিয়েছে।