প্রধান উপদেষ্টা নাকি প্রধানমন্ত্রী ড. ইউনূস!

ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস  © টিডিসি ফটো

অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক উত্থান-পতনে ক্ষতবিক্ষত বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা আনতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর ভরসা রাখছেন আপামর ছাত্র-জনতা। ড. ইউনূস, যিনি মূলত দারিদ্র্য দূরীকরণের কাজে অভূতপূর্ব সফলতার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। গত সোমবার (৫ আগস্ট) ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার আকস্মিক পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর মঙ্গলবার দেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে এ অর্থনীতিবিদকেই মনোনীত করা হয়েছে। 

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদবি কী হবে? তাঁকে কি প্রধান উপদেষ্টা বলা হবে নাকি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করা হবে। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর এই সরকার পরিচালনার পদ্ধতি এবং সময়সীমা নিয়েও আলোচনা রয়েছে। 

বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনুসকে প্রধানমন্ত্রী বলা কিংবা সাব্যস্ত করার কোন সুযোগ নেই। কারণ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য যে-সকল শর্ত পূরণের প্রয়োজন ছিল সেটা নেই। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত হতে হয় এবং জাতীয় সংসদের সদস্য হতে হয়৷ যেটা ড. ইউনুসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ফলে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতাবলে দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ায় ড. ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে।’

ড. ইউনূসের দায়িত্ব প্রাপ্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে এই অধ্যাপক বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি তাঁর ডকট্রিন অব নেসেসিটি ক্ষমতা অনুযায়ী এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের অনুমতি দিয়েছে। আমাদেরকে প্রথমে প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলতে হবে। কারণ শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকেই শুধু পদত্যাগ করেননি, তিনি দেশত্যাগ করেছেন। কাজেই এই ত্যাগের অর্থ দাঁড়ায় যে, প্রধানমন্ত্রী দেশ চালাতে আগ্রহী নয় কিংবা তার সামর্থ্য নেই। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি দুটি কাজ করতে পারতেন, হয় নিজের ক্ষমতাবলে নয়তো সংবিধানের ১০৬ ধারা অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নিয়ে সরকার গঠনের অনুমতি দিতে পারতেন।’

সংবিধানের আলোকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কতদিনের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে কিংবা এক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোকপাত করে অধ্যাপক বোরহান বলেন, ‘প্রথমত নির্বাচন আয়োজন করতে হলে তাদের ভোটারদের তথ্য হালনাগাদ করতে হবে। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনসহ অন্য যে-সকল শাখাগুলোতে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে সেটির জন্য সময়ের প্রয়োজন পড়বে। সর্বোপরি আমার মনে হয় এক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনেরও প্রয়োজন হতে পারে। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন প্রক্রিয়াটি সংবিধানের আলোকে নয় বরং রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতাবলে নিয়োগ। কাজেই তারা যে নির্বাচনটির আয়োজন করবে সেটির জন্য প্রথমত নাগরিকদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ