হিজরী যে সন থেকে ঈদুল ফিতর উদযাপন শুরু হয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৯ PM , আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৮ PM
সারা বিশ্বে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ। এর একটি ঈদ-উল ফিতর, আর অন্যটি ঈদ-উল আযহা, যাকে কোরবানীর ঈদও বলা হয়। বাংলাদেশের মুসলমানরা সবচেয়ে বড় উৎসব হিসেবে বিবেচনা করেন ঈদ-উল ফিতরকে এবং এককথায় সবার কাছে পরিচিত ঈদ হিসেবে।
রাসুল মুহাম্মদ (সা.) যখন মক্কা থেকে ৬২২ খ্রিস্টাব্দে হিজরত করে মদিনায় যান, সেই সময়টিকে ভিত্তি ধরে হিজরী সাল গণনা করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে অবশ্য হিজরী সাল গণনা শুরু করা হয়েছিল আরো ১৭ বছর পরে, খলিফা ওমর রা. এর সময়ে।
মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়্যতের প্রথম ১৩ বছরের জীবনে রোজা ও ঈদের বিধান প্রচলিত ছিল না। তার হিজরতের আগে মদিনায় নওরোজ ও মেহেরজান নামে দুটি উৎসব প্রচলিত ছিল। মদিনাবাসীরা নববর্ষ উপলক্ষে নওরোজ এবং বসন্ত উপলক্ষে মেহেরজান পালন করত।
মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়্যতের প্রথম ১৩ বছরের জীবনে রোজা ও ঈদের বিধান প্রচলিত ছিল না। তার হিজরতের আগে মদিনায় নওরোজ ও মেহেরজান নামে দুটি উৎসব প্রচলিত ছিল। মদিনাবাসীরা নববর্ষ উপলক্ষে নওরোজ এবং বসন্ত উপলক্ষে মেহেরজান পালন করত।]
আরও পড়ুন: সাদাকাতুল ফিতর কখন কার ওপর কতটুকু পরিমাণ ওয়াজিব
এ বিষয়ে রাসুল স. এর সাহাবী হযরত আনাস বিন মালিক (রাঃ) বলেন, প্রতি বছর মুশরিকদের জন্যে দুটি দিন ছিল, সেদিন তারা আনন্দ-উৎসব করতো। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আসেন তখন তিনি বলেন, তোমাদের ঐ দুটি উৎসবের চেয়ে আরও উত্তম দুটি আনন্দের দিন দেয়া হলো। ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা। (সুনানে নাসায়ি, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নম্বর-১৭৭, সুনানে আবু দাউদ, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নম্বর-১৬১, হাদিস নম্বর-নম্বর-১১৩৬)।
রোজা ফরজ হওয়ার ব্যাপারে হযরত ইমাম ইবনে জারির তাবারি রহ.ও ইবনে কাসির রহ.মতে রমজানের রোজা বদরের যুদ্ধের এক মাস সাত দিন পূর্বে আর হিজরতের দেড়বছর পর ২ হিজরি শাবান মাসের ১০ তারিখে ফরজ করা হয়। (বিদায়া-নিহায়া ৩য় খণ্ড ১১৩ পৃষ্ঠা)
মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ। একটি উপবাস ভাঙার (ঈদুল ফিতর) আনন্দ, অন্যটি (আখিরাতে) আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের আনন্দ।’
মহানবী (সা.) বলেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ। একটি উপবাস ভাঙার (ঈদুল ফিতর) আনন্দ, অন্যটি (আখিরাতে) আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের আনন্দ।’
হযরত সাহল রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারিম সা. বলেন, জান্নাতে রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন রোজা পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেয়া হবে, রোজা পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাড়াবে। তারা ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে এ দরজাটি দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে। (বুখারি ১৭৭৫)
প্রথমে ঈদ উদযাপন মদিনায় শুরু হলেও পরবর্তীতে পুরো দুনিয়ায় মুসলমানদের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রচলিত হয়ে যায় ঈদ পালন। কালক্রমে অঞ্চলভেদে এই উৎসবে ভিন্ন ভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা যুক্ত হয়।
এই দুই উৎসবে মুসলমানরা পারস্পরিক ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব, প্রীতি ও সৌহার্দ্যের অনুপম দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে। ভেদাভেদ সরিয়ে দেয় দূরে। আল্লাহ এমন বরকতময় দুটি উৎসব আগে আর কোনো উম্মতকে উপহার দেননি।