কখন দেখব সোনা চানকে— ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বুকে নিয়ে কান্না ইডেনছাত্রী বৃষ্টির মায়ের

অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুন ও তার মা বিউটি বেগম
অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুন ও তার মা বিউটি বেগম  © সংগৃহীত

রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে নিহত সাংবাদিক ও ইডেন কলেজছাত্রী অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। তার পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা থাকায় ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা হবে না। তার মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

রবিবার (৩ মার্চ) সকালে কুষ্টিয়ার খোকসার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বনগ্রামে বৃষ্টির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, থমথমে বাড়ির পরিবেশ। যেন শোকে পাথর হয়ে গেছে সবাই। প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজন বাড়িতে এসে ভিড় জমিয়েছে।

নিহতের মা বিউটি বেগমকে ঘরের বারান্দায় এনে বসানো হয়েছে। নিহত বৃষ্টির ইডেন কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বুকে ধরে বসে আছেন। কিছুক্ষণ পর পর শুধু বৃষ্টি বৃষ্টি করে উঠছেন, আবার চুপ হয়ে যাচ্ছেন। 

তিনি বিলাপ করছেন, আর মেয়ের স্মৃতিচারণ করছেন। বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন আর প্রতিবেশীদের বলছেন, আমার সন্তান আমার কাছে না দিয়ে, কোনখানে রাখছে গো। আমার মেয়েকে আমার কাছে দাও। কখন আসবে আমার সোনা মনি। কখন দেখব সোনা চানকে

ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম বলেন, নিহত সাংবাদিকের নাম বৃষ্টি খাতুন। তার বাবার নাম সবুজ শেখ, মায়ের নাম বিউটি বেগম। কুষ্টিয়ার খোকসার বনগ্রামে তার বাড়ি।

তিনি আরও জানান, ২০১৭-১৮ সেশনে বৃষ্টি ইডেন কলেজের দর্শন বিভাগে ভর্তি হয়। দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা অংশ নেয়। এরপর বৃষ্টি তৃতীয় বর্ষের ফরম পূরণ করে। কিন্তু আর পরীক্ষা দেয়নি। ইডেনের রাজিয়া বেগম হোস্টেলের আবাসিক ছাত্রী ছিল। সে দুই বছর পর হল ছেড়ে দেয়।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ