একজনও প্রকৃত অনুসারী পেলাম না, বিদায়ী ডাক মন্ত্রীর আক্ষেপ

মোস্তফা জব্বার
মোস্তফা জব্বার  © ফাইল ছবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বাংলার ব্যবহার নিয়ে আক্ষেপ করেছেন সদ্য বিদায়ী ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। সাবেক এ মন্ত্রীর সঙ্গে ফেসবুকে যোগ হতে হলে আইডির নাম বাংলায় হতে হয়। বাংলা ছাড়া অন্য কোনো ভাষার অক্ষরে থাকা আইডিকে তিনি বন্ধু বানান না। গত ৩ ডিসেম্বর তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন।

সেখানে তিনি লিখেন, ‘‘এখনও এমন কেউ নেই যিনি বাংলা অক্ষরে আইডির নাম না থাকলে ফেসবুকে বন্ধু বানান না? মানে একজনও প্রকৃত অনুসারী পেলাম না!’’

তাঁর এই পোস্টে অনেকেই ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। মোর্শেদ চৌধুরী ইয়ামিন নামে এক ব্যক্তি মন্তব্যের ঘরে লিখেন, ‘তাহলে তো ফেইসবুকে ১০-১২ টার বেশি ফ্রেন্ড রাখা সম্ভব হবেনা স্যার...।’

জবাবে সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘আমার ৫ হাজার বন্ধু আছে। প্রতিদিনই আরও অনুরোধ আসে। ৫ হাজারের বেশি বন্ধু রাখা যায়না, তাই এতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। তবে হ্যাঁ একটা বাংলা অক্ষরের নামের অনুরোধ পেলে রোমান হরফের অনুরোধ পাই ২০টা।’

এর আগেও ফেসবুক এক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, ‘‘আমি কেবল বাংলা হরফে বাংলা লিখি এবং কেবলমাত্র বাংলা ভাষা বুকে ধারণ করি। আমি মনে করি ফেসবুক গুজব, অপপ্রচার, মানহানি বা ধর্ম প্রচারের বাহন নয়-সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। আমি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করার সৈনিক। সবাই আমার মতের সাথে একমত হবেন এটি আমি প্রত্যাশা করিনা। তবে যারা আমার মতামতকে শ্রদ্ধা করেন না, ভালোবাসেননা বা আমার মতে বিশ্বাস করেননা তারা আমাকে অনুসরণ করবেন না বা বন্ধুও থাকবেন না। আপনি আপনার নাম বাংলায় না লিখলে আমার বন্ধু থাকতে পারবেন না-অনুসারী হতে পারবেন।’’

আরও পড়ুন: ইংরেজি নামের ১২ জনকে 'আনফ্রেন্ডকরলেন মোস্তফা জব্বার

বাংলায় কম্পিউটার ব্যবহার জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে মোস্তাফা জব্বারের ভূমিকা অনেক। তাঁর হাত ধরেই কম্পিউটারে বাংলা ব্যবহার, হরফের উৎকর্ষ শৈলী, প্রকাশনা শিল্পের যুগোপযোগী আধুনিকীকরণ, কম্পিউটার উপকরণের যুতসই ব্যবহার শুরু হয়। ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর তিনি প্রকাশ করেন বিজয় বাংলা কিবোর্ড ও সফটওয়্যার। সেটি প্রথমে মেকিন্টোস কম্পিউটারের জন্য প্রণয়ন করেন। পরবর্তীতে সব অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার হচ্ছে।

মোস্তাফা জব্বারের সুদীর্ঘ কর্মজীবনে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি আন্দোলনের ও ব্যবহারে জনসম্পৃক্তির মৌলিক আলোচনার এক গভীর যোগসূত্র রয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সরকারি ও বেসরকারি দাপ্তরিক কাজে ইংরেজি ব্যবহারের তীব্র সমালোচক তিনি। ইংরেজি হরফে বাংলা লেখারও সমালোচনা করেন তিনি। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলা ভাষায় জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চা তথা গবেষণাপত্র প্রকাশের গুরুত্বারোপ করেন সাবেক এ মন্ত্রী। তাঁর মতে, উচ্চ আদালতে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার ব্যবহার প্রতিষ্ঠিত না হলে বাংলার বিজয় সম্পন্ন হবে না এবং একুশের চেতনা রক্ষা করা যাবে না।


সর্বশেষ সংবাদ