ফেসবুক লাইভে আ.লীগ নেতা বললেন, ‘মদ হচ্ছে একটা মেডিসিন’

ফিরোজুর রহমান ওলিও
ফিরোজুর রহমান ওলিও  © ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

‘মদ হলো মেডিসিন’। এটা মেডিসিন হিসাবে খায়’ বলে মন্তব্য করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজুর রহমান ওলিও। গত সোমবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে এ মন্তব্য করেছেন তিনি। এরই মধ্যে তাঁর এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে লড়াই করে সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এবার খায়েশ সংসদ সদস্য (এমপি) হবেন। পদত্যাগ করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে। ওলিও ছিলেন পাঁচবারের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।

তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লায়ন ফিরোজ কিংবা ওলিও নামে তিনি বেশি পরিচিত। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর তার স্বাক্ষরিত লিখিত পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে লড়তে পদত্যাগ করেছেন বলে তিনি ওই পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন। নির্বাচন বিষয়ে সোমবার রাতে নিজ ফেসবুক একাউন্ট থেকে লাইভে আসেন।

সজিবুল হুদা ভূঁইয়া নামে একজন ফেসবুক লাইভের মন্তব্যের ঘরে তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি সংসদ সদস্য হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মদের বার খুলবেন কি?’

জবাবে ফিরোজুর রহমান ওলিও বলেন, ‘সংসদ সদস্যরাই মদের লাইসেন্স দিচ্ছে। এ দেশে বিখ্যাত মদের কারখানা বানায়ে রাখছে। আগে তো রেলস্টেশনে মদের দোকান ছিল। তুমি যদি আবদার করো তাইলে দেব। তবে তোমরা এ মদ খাইতে পারবা না। সেই শক্তি তোমাদের হইছে না। মদ হচ্ছে একটা মেডিসিন। ভালো কথা বলো। এটা মেডিসিন হিসাবে খায়। তোমার যদি ইয়ে থাকে, ডাক্তার বললে ব্যবস্থা করে দেব। আমরা তো ঘুষ খাই না। আমরা তো মানুষের মনে আঘাত দেই না। আমরা শুনি, ঘুষের টাকা কোথায় ধরা খাইছে। সরকারকে জিগাইবা কেন দেয়। তোমাদের সরকারই দিতাছে।’

ওলিও বলেন, ‘আমার ম্যানেজাররা চুরি কইরা লক্ষ কোটি টাকা নিয়ে নিজেরা কয়েকটা দিছে। যদিও আমি ব্যবসায় নাই। আমার ব্যবসা, পবিত্র ব্যবসা। আমি হালাল ব্যবসা করি। হালাল না হলে সরকার ব্যবসা করে কেন। হালাল না হলে সরকারই বেহালাল হয়া যায়। আমি ব্যাংকের ব্যবসা করি। মদের ব্যবসার জন্য যদি ১০টা বেত মারে। তাহলে ব্যাংকের ব্যবসার জন্য একশটা বেত মারবে। ইসলাম কী কইছে না কইছে সরকার বুঝবে। ভালো কথা বলো।’

আরও পড়ুন: ৯ আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী

সবার কাছে দোয়া চেয়ে লাইভের শুরুর ভাগে ফিরোজুর রহমান ওলিও বলেন, ‘এটাই আমার শেষ নির্বাচন। আশা করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনেক স্মৃতি আছে, সেগুলো মনে করে মনোনয়ন দেবেন। আমি কী করেছি তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানেন। আমি বঙ্গবন্ধুর... নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনটা করতে চাই। বর্তমান যে সংসদ সদস্য রবিউল (র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী) ভাই আছেন, তিনি অত্যন্ত ভাল মানুষ। উনি তো তিনবার সংসদ সদস্য হলেন। আমি বলব, উনাকে যেন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী করা হয়। তারপরও দেখা যাক কী হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগরে আমি কাজ করতে চাই। আমি বিজয়নগরে যেতে পারিনি। সেখানকার মানুষজনের কাছে আমি ক্ষমা চাই।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন তিনি। একইসঙ্গে আজ তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা নেন।

প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ফিরোজুর রহমানের রাজধানী ঢাকায় হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনাল এবং গোল্ডেন ড্রাগন ও পিকক নামের দুটি বারসহ বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এবারের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। আসনটিতে বর্তমানে সংসদ সদস্য রয়েছেন র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।


সর্বশেষ সংবাদ