দুশ্চিন্তা ও হতাশা তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে

জিপিহাউজে আয়োজিত ‘মানসিক স্বাস্থ্য সার্বজনীন অধিকার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা
জিপিহাউজে আয়োজিত ‘মানসিক স্বাস্থ্য সার্বজনীন অধিকার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা  © সংগৃহীত

তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যকে কেন্দ্র করে ব্রাইটার টুমোরো ফাউন্ডেশনের সঙ্গে অংশীদারিত্বে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে গ্রামীণফোনের ফ্ল্যাগশিপ লার্নিং প্ল্যাটফর্ম জিপি অ্যাকাডেমি। বর্তমানের কর্মব্যস্ত বিশ্বে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে সকলকে প্রায়শই নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়, এক্ষেত্রে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা অত্যন্ত জরুরি।

এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে সম্প্রতি রাজধানীর জিপিহাউজে আয়োজিত ‘মানসিক স্বাস্থ্য সার্বজনীন অধিকার’ শীর্ষক আয়োজনটিতে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়। এতে জিপি অ্যাকাডেমির প্রায় একশ  শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তারা বলেন, দুশ্চিন্তা ও হতাশা তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্থ করছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক মোহিত কামাল এবং ব্রাইটার টুমোরো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জয়শ্রী জামানসহ অন্য অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ, সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা রহমান এবং গ্রামীণফোনের হেড অব স্ট্র্যাটেজিক প্রজেক্টস এন্ড পার্টনারশিপস রাসনা হাসানসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আমাদের তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে যে সকল চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তাই উঠে এসেছে জিপি অ্যাকাডেমি ও ব্রাইটার টুমোরো ফাউন্ডেশনের অংশীদারিত্বের মাধ্যমে। জাতি হিসেবে আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও তাদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করাসহ তরুণদের সার্বিক উন্নয়ন গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা অপরিহার্য।’

তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি; এক্ষেত্রে আমরা জানি, আমাদের তরুণ জনসংখ্যাকে দক্ষ ও আত্মবিশ্বাসী করা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সুস্থ ও  সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্য অর্জনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকার জন্য গ্রামীণফোনের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।’

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, ‘ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রয়েছে গ্রামীণফোন, সেই সাথে কিশোর ও তরুণদের জন্য নিরাপদ ডিজিটাল পরিসর নিশ্চিতেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষা ও সম্ভাবনার অনুসন্ধানের প্রশ্নে অনলাইন জগত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম, যেক্ষেত্রে ডিজিটাল সক্ষমতা গঠনে শিশু কিশোর ও অভিভাবকদের সহযোগিতা করে যাচ্ছি আমরা।’

তিনি বলেন, ‘মানসিক সুস্বাস্থ্য সফল ভবিষ্যৎ গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, আর তাই মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উদযাপনের মাধ্যমে এই বার্তাটি সকলের কাছে পৌঁছে দেয়ার গুরুত্ব তুলে ধরা ও একে অগ্রাধিকার দেয়ার লক্ষ্যে ব্রাইটার টুমরো ফাউন্ডেশনের সাথে কাজ করছে গ্রামীণফোন।’

আরো পড়ুন: অটোচালকের সততায় ‘সোয়া লাখ’ টাকা ফেরত পেলেন যাত্রী

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মোহিত কামাল বলেন, ‘পড়াশোনা ও ক্যারিয়ারের চিন্তাসহ নানা কারণে আমরা এখন তরুণদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ও হতাশা দেখতে পাই, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। আমরা তরুণদের মাঝে ইতিবাচকতার বার্তা পৌঁছে দিতে চাই, শত অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও প্রাণবন্ত থাকার সাহস যোগাতে চাই, কারণ এটিই তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তুলবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি গ্রামীণফোন ও ব্রাইটার টুমোরো ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানাই চমৎকার এই আয়োজনের জন্য। আগামীর নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তরুণদের মাঝে যে আত্মবিশ্বাস থাকা প্রয়োজন, নিয়মিত এমন আরো আয়োজনের মাধ্যমে তা অর্জন করা সম্ভব।’

জিপি অ্যাকাডেমি একটি উন্মুক্ত আপস্কিলিং প্ল্যাটফর্ম, যার সাথে যুক্ত রয়েছেন ৭০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। রূপান্তরমূলক দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগের মাধ্যমে তরুণদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলার লক্ষ্যে এইটা তৈরি করা হয়েছে। তরুণদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো, যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত করা এবং পেশাদারদের মধ্যে কার্যকরী আন্তসম্পর্ক গড়ে তোলাই জিপি অ্যাকাডেমির লক্ষ্য বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। 


সর্বশেষ সংবাদ