অটোচালকের সততায় ‘সোয়া লাখ’ টাকা ফেরত পেলেন যাত্রী

মালিকের কাছে টাকা ফিরিয়ে দেন অটোচালক রাসেল মিয়া
মালিকের কাছে টাকা ফিরিয়ে দেন অটোচালক রাসেল মিয়া   © সংগৃহীত

নেত্রকোনার মদনে ফেলে যাওয়া টাকা ভর্তি ব্যাগ ফিরিয়ে দিল রাসেল মিয়া নামের এক ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক। সোমবার (১৬অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে মদন বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দের চেম্বারে টাকার ব্যাগের মালিক রহিমা আক্তারের কাছে ফেরত দেওয়া হয়। এতে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ও কাপড় চোপড় ছিল। অটোচালক রাসেল মদন সদর ইউনিয়নের কুলিয়াটি দক্ষিণপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। 

জানা গেছে, রহিমা আক্তার আটপাড়া উপজেলার তারাচাপুর গ্রামের ওয়াছকরুনীর স্ত্রী। সোমবার বিকেলে মদন ব্রাক অফিস থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার একটি ঋণ উত্তোলন করেন। তার স্বামী ওয়াছকরুনী মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকায় টাকার ব্যাগ নিয়ে হাসপাতালে যান। রহিমার স্বামীর ছোট বোন তারিফা আক্তার তার অসুস্থ ভাইকে দেখতে হাসপাতালে আসে। পরে তারিফা তার বাবার বাড়ি আটপাড়া উপজেলা তারাচাপুর গ্রামে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলে রহিমার সাথে থাকা টাকার ব্যাগ তার স্বামীর ছোট বোনের কাছে দিয়ে দেন। তারিফা আক্তার টাকার অটোরিকশায় ফেলে বাড়িতে যাওয়ার পর ব্যাগের কথা মনে পড়ে। তখন খুঁজাখুঁজি করে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন।

এদিকে অটোরিকশা চালক রাসেল মিয়া সোমবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে গাড়িতে টাকার ব্যাগ পেয়ে তার বাবার কাছে বিষয়টি বলেন। রাসেল তার বাবার পরামর্শে অটো স্ট্যান্ডের মাস্টার ছোট্ন মিয়াকে কে জানালে তিনি অটো স্ট্যান্ডের সভাপতি কামরুল মিয়াকে জানান। কামরুল মিয়া স্ট্যান্ডে চালকদের সাথে আলোচনা করেন এবং প্রকৃত মালিককে খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান পান। রাতে ব্যাগের মালিক রহিমা আক্তারকে খবর দিয়ে এনে সোমবার রাত ১১ টার দিকে মদন বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দর চেম্বারে টাকার ব্যাগটি ফেরত দেন।

আরও পড়ুন: গৃহশিক্ষদের সাইকেল চুরি করাই তাদের পেশা

টাকার মালিক রহিমা আক্তার জানান, মদন ব্রাক অফিস থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করেছিলাম। টাকাটা না পেলে আমার খুব বড় ক্ষতি হয়ে যেত। অটো রিকশা চালক রাসেল মিয়া টাকার প্রতি লোভ না করে ফেরত দিয়ে বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা করেছে। 

অটো রিকশা চালক রাসেল মিয়া জানান, আমি হাসপাতালের সামনে থেকে যাত্রী এনে মদন বাজার নামিয়ে দিয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার গাড়িতে একটি ব্যাগ। ব্যাগ খুলে দেখি অনেক টাকা এবং কিছু কাপড়চোপড়। পরে আমার বাবাকে জানালে তার পরামর্শ স্ট্যান্ডের সভাপতিকে জানাই। পরে প্রকৃত মালিকের সন্ধান পেলে তার হাতে টাকাটা তুলে দেই। 

তিনি আরও জানান, আমার অন্যের জিনিসপত্রের প্রতি কোন লোভ নেই। আমি অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় করি তাতে আমার সংসার চলে যায়।

অটো স্ট্যান্ডার সভাপতি কামরুল ইসলাম আকন্দ বলেন, অটো চালক রাসেল আমাকে জানালে আমি স্ট্যান্ডের চালকদের সাথে আলোচনা করি। পরে রাতেই ব্যাগের মালিকের সন্ধান পাই। রাসেলকে নিয়ে টাকার ব্যাগের মালিকের কাছে ফেরত দেই। সে আরও কয়েকবার মানুষের টাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র আমার মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তামন সময়ে এমন সৎ মানুষ পাওয়া খুব কঠিন। রাসেল অটোচালক হয়েও টাকার প্রতি লোভ না করে টাকার ব্যক্তি ফেরত দিয়ে বড় মনের পরিচয় দিয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence